হেফাজতের সমাবেশে ‘গণহত্যা’, শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের নামে মামলা
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী-আল ফারাবীর আদালতে এ মামলা করেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী। এর আগে জাকী-আল ফারাবীর আদালতে মামলার আবেদন করেন এই রাজনীতিবিদ।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মতিঝিল থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। মামলার আবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৭/৩৬৫/৩৬৬/৩০৭/৩২৬/৩০২/৩৪ ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন
- শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার আরও এক অভিযোগ
- শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগের তদন্ত শুরু
- গণহত্যার ২ মামলায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু
- হেফাজতের সমাবেশে গুলি: শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের নামে হত্যা মামলার আবেদন
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামরিক উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস, সাবেক সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবুল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, হাসান মাহাবুব খন্দকার, র্যাবের সাবেক প্রধান এ কে এম শহিদুল হক, এনএসআইয়ের সাবেক প্রধান জিয়াউল হাসান, মতিঝিল বিভাগের সাবেক ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার, মতিঝিল থানার সাবেক ওসি ওমর ফারুক, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মুনসুর আহমেদ, তৎকালীন মতিঝিল থানার ছাত্রলীগ সভাপতি মাহাবুবুল হক হিরন, ইমরান, আওয়ামী লীগ নেত্রী মমতাজ পারভীন, মতিঝিল থানার সাবেক ওসি ফরমান আলী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সালু, মতিঝিলের সাবেক ডিসি নাজমুল আলম, হামদর্দ গ্রুপের অবসরপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর মেজর ইকবাল ও আশরাফুজ্জামান।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ব্লগাররা ধর্মীয় অবমাননা ও হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তি এবং বাজে লেখালেখি করার প্রতিবাদে হেফাজত ইসলাম ১৩ দফা দাবি সরকারের কাছে দেয়। সরকার দাবি না মানায় ২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিল শাপলা চত্বরে রাস্তায় অবস্থান নেয় হেফাজত। ওইদিন রাত ১১টা থেকে পরের দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত রাস্তা ও বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে শেখ হাসিনার মদতে আসামিদের যোগসাজশে অন্য আসামিরা এজাহারে বর্ণিত পুলিশ ও আর্মি সদস্যরা মিলে নিরীহ মাদরাসাছাত্র ও পথচারীদের ওপর গণহত্যা চালায়। তাদের হত্যা করে লাশ সিটি করপোরেশনের গাড়িতে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে গুম করে।
আরও পড়ুন
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্র হত্যা মামলা
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবার শিশুহত্যা মামলা
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগে মামলা
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবার অটোরিকশাচালক হত্যা মামলা
বাদী আরও উল্লেখ করেন, এসময় বহু মাদরাসাছাত্র হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তাদের অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা ও জিডি করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা নেয়নি। একজন রাজনীতিবিদ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নির্বিচার গণহত্যার কারণে আদালতে মামলাটি এনেছেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর এ নিয়ে ঢাকায় তার বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হলো। ছয়টি হত্যার অভিযোগে আর একটি মামলা করা হয় গুম এবং অপহরণের অভিযোগ।
জেএ/বিএ/এমএস