সেতু ভবনে হামলা: বিএনপির নিরবসহ ৭ জন পাঁচ দিনের রিমান্ডে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৩৮ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২৪
ফাইল ছবি

বনানীর সেতু ভবনে হামলার ঘটনায় করা মামলায় বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম নিরবসহ সাতজনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মামলায় অন্য যাদের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে তারা হলেন, বিএনপি নেতা শিমুল বিশ্বাস, রফিকুল ইসলাম মজনু, রশীদুজ্জামান মিল্লাত, সৈয়দ এহসানুল হুদা, মহিউদ্দিন হূদয় ও তরিকুল ইসলাম।

বুধবার (২৪ জুলাই) আসামিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রে ট নূরুল হুদা চৌধুরি তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১৮ জুলাই প্রতিদিনের ন্যায় সেতু ভবনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী যথারীতি অফিসের কার্যক্রম করতে থাকে। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অজ্ঞাতনামা ২৫০ থেকে ৩০০ জন আসামি কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে আইন-শৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতা করার লক্ষ্যে বেআইনি জনতাবদ্ধে আবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোটা, ইটপাটকেল নিয়ে আমাদের অফিসের সামনে এসে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।

সেতু ভবনের সিনিয়র সচিবসহ কর্মকর্তাদের পদ-পদবি উল্লেখ করে খোঁজাখুজি করে হুমকি প্রদর্শন ও ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক ভীতি সৃষ্টি করে সেতু ভবনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে আসামিরা আমাদের অফিসের মূল ফটক ভেঙে অনধিকার প্রবেশ করে সেতু ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে নিচ তলায় ভবনের সামনে রক্ষিত জিপ, কার, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেল, নিরাপত্তা ভবন, সিসি ক্যামেরা, পার্কিং শেড, ক্যান্টিন, গাড়ি চালকদের কক্ষ, আনসার শেড, মুজিব কর্নার, জেনারেটর কক্ষসহ মূল ভবন ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ ঘটায়। এ সময়ে সেতু ভবনের সিনিয়র সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সেতু ভবনের ভেতরে থাকা অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তা কর্মী আসামিদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলে আসামিরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠি সোটা, ইটপাটকেল দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে সেতু ভবনের সিনিয়র সচিব, অন্যান্য অফিস স্টাফ ও নিরাপত্তা কর্মীদের এলোপাতাড়ি মারধর করে সাধারণ ও গুরুতর জখম করে।

মামলার এজাহার থেকে আরও জানা যায়, পরবর্তীতে আসামিরা নিচ তলার আনসার শেড, ড্রাইভার শেড হতে চেয়ার টেবিলসহ অন্যান্য আসবাবপত্র এবং সেতু ভবনের ভিতরে প্রবেশ করে নিচ তলা হতে ১১তলা পর্যন্ত অফিসে ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে অফিসে রক্ষিত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফাইল কেবিনেট, এসি, ফ্যান, পানির ফিল্টার, চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য সরকারি ও ব্যক্তিগত মালামাল সামগ্রী চুরি করে এবং প্রত্যেক ফ্লোরে অগ্নিসংযোগ ঘটায়।

আসামিদের এরূপ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগে সেতু ভবনের নিচ তলা হতে ১২তলা পর্যন্ত ফ্লোরে রক্ষিত সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, পদ্মা সেতু প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুলেন সড়ক টানেল- প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প সেতু বিভাগের আওতাধীন সকল প্রকল্পের প্রধান কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দলিল, এফডিআর ইনস্ট্রুমেন্ট, টেন্ডার সিকিউরিটি ডকুমেন্টস, ইন্টারনেট সার্ভার, শতাধিক কম্পিউটার ও কম্পিউটার সামগ্রী, আসবাবপত্র, কম্পিউটার, জেনারেটর, ফায়ার এক্সটিংগুইশারসারসহ যাবতীয় নথিপত্র এবং সেতু ভবনের পার্কিংয়ে তা থাকা ৩২টি জিপ গাড়ি, ৯টি পিকআপ, ৭টি মাইক্রোবাস, একটি মিনিবাস, ৫টি মোটরসাইকেল, একটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিলে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতিসাধন হয়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মারফত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ইউনিটকে সংবাদ প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় সেতু ভবনের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

জেএ/এসএইচএস/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।