হাইকোর্টের রায়ে স্থিতাবস্থা, কোটা বাতিলের পরিপত্র বহাল
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা পদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর একমাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ফলে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্রটি বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পরে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন জানান, আপিল বিভাগ স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন। ফলে যা ছিল, তা-ই থাকবে। অর্থাৎ, কোটা বাতিল নিয়ে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল থাকছে।
আরও পড়ুন
- সব কোটা ফিরছে কি না, স্পষ্ট হবে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশে
- কোটা বাতিলের পর সরকারি নিয়োগে নারীর অবস্থান কোথায়?
এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে করা দুটি আবেদনের শুনানির জন্য বেলা সাড়ে ১১টায় নির্ধারণ করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটা পদ্ধতি তুলে দেয় সরকার। ওই বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিল নিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
পরিপত্রটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে গত ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন
- কী ছিল আলোচিত ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনে?
- কোটা বণ্টনে সংস্কার জরুরি, সমাধানের সূত্র সরকারের হাতেই
- যেভাবে বাতিল হয়েছিল কোটা
পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন চেম্বার আদালত হয়ে ৪ জুলাই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। রিটকারী পক্ষের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন আপিল বিভাগ নট টুডে (৪ জুলাই নয়) বলে আদেশ দেন। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলা হয়।
এ অবস্থায় সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী আবেদন করেন। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া ও উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান।
ওই দুই শিক্ষার্থী ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর আজ একমাসের স্থিতাবস্থা দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আজ দুই শিক্ষার্থীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
এফএইচ/এমকেআর/এএসএম