হাইকোর্ট

অসুখী দাম্পত্য জীবন স্ত্রীকে স্বামী হত্যার লাইসেন্স দিতে পারে না

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ এএম, ৩০ জুন ২০২৪
ফাইল ছবি

অসুখী দাম্পত্য জীবন কোনো স্ত্রীকে তার স্বামীকে এত নিষ্ঠুরভাবে হত্যার লাইসেন্স (অনুমতি) দিতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

সিলেটের ইব্রাহিম আবু খলিল (৫৫) হত্যা মামলায় তার স্ত্রী ফাতিহা মাশকুরার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে দেওয়া রায়ে এমন মন্তব্য করেছেন উচ্চ আদালত।

২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়েছে।

আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, এক মাস আগে রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পেয়েছি। এরপর উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছি।

সিলেটের ধোপাদিঘির উত্তরপাড় আঞ্চলিক শাখার আমির ইব্রাহিম খলিলের গলাকাটা মরদেহ তার নিজ বাসার শয়নকক্ষ থেকে ২০১৫ সালের ১৮ মে উদ্ধার করা হয়।

মরদেহ উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার স্ত্রী ফাতিহা মাশকুরাকে আটক করে পুলিশ। এরপর মাশকুরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

একই বছরের ২৪ আগস্ট ফাতিহার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০১৬ সালের ৬ জুন সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা একমাত্র আসামি খলিলের স্ত্রী ফাতিহা মাশকুরাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

আরও পড়ুন

এরপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল করেন। মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স গ্রহণ এবং আসামির আপিল খারিজ করে ৩১ জানুয়ারি রায় দেন হাইকোর্ট।

রায়ে হাইকোর্ট বলেন, অভিযুক্ত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তার বিদ্বেষপূর্ণ বৈবাহিক জীবনের একটি চিত্র দিয়েছেন। কিন্তু এ ধরনের অসুখী দাম্পত্য জীবন অভিযুক্তকে তার স্বামীকে এত নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করার অনুমতি দিতে পারে না। তিনি যদি তার দাম্পত্য জীবনে সন্তুষ্ট না হতেন তবে তিনি সহজেই তার স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারতেন। কিন্তু, সে সুযোগ না নিয়ে অভিযুক্ত তার স্বামীর জীবন শেষ করার জন্য সবচেয়ে নিষ্ঠুর উপায় অবলম্বন করেন।

হাইকোর্ট আরও বলেন, অভিযুক্ত কোনো তাৎক্ষণিক উসকানি ছাড়াই এবং তার স্বামীর পক্ষ থেকে দেওয়া আস্থার সুযোগ নিয়ে অত্যন্ত নৃশংস ও নিষ্ঠুরভাবে তার স্বামীকে হত্যা করেন। অভিযুক্ত স্ত্রী তার স্বামীর জীবন শেষ করার জন্য তার বিবেকের কোনো বেদনা অনুভব করেননি।

অপরাধের প্রকৃতি বিবেচনা করে আমরা অভিযুক্ত স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড হ্রাস করার কোনো উপায় খুঁজে পাই না। বরং, এটা আমাদের নিরঙ্কুশ দৃষ্টিভঙ্গি যে, ন্যায়বিচার সর্বোত্তমভাবে কার্যকর হবে যদি দোষীর মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে, মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।

এফএইচ/কেএসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।