ইশরাকের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন, শুনানি বৃহস্পতিবার
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে মামলার তদন্ত সংস্থা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টাকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানায় করা মামলায় এ রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইশরাকের উপস্থিতিতে এ রিমান্ড শুনানি হবে।
বুধবার (২৯ মে) পল্টন থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কবির হোসেন মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী আসামি ইশরাকের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন।
এর আগে রোববার (১৯ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে ইশরাক জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় এ মামলা করেন। মামলায় বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফীসহ চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৮ অক্টোবর পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশেরর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা ও গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করেন। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক পুলিশ সদস্য নিহত হন। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে আসামি জাহিদুল ইসলাম আরেফী (মিয়া আরেফী), চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মী কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে উপস্থিত হন। এসময় এক নম্বর আসামি মিয়া আরেফী নিজেকে বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। বাংলাদেশ পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মার্কিন সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি।
সেখানে মিয়া আরেফী বক্তব্যে দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। এ আসামি আরও দাবি করেন, তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।
এজাহারে বাদি আরও অভিযোগ করেন, মামলার ২ নম্বর আসামি হাসান সারওয়ার্দী এবং ৩ নম্বর আসামি ইশরাক হোসেন মিয়া আরেফীকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন। তারা তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। এক নম্বর আসামি অন্য আসামিদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ তৈরি করে সারাদেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।
এজাহারে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে মিয়া আরেফীর বক্তব্যে এবং ভিডিওতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে।
জেএ/কেএসআর/জিকেএস