মানবপাচার মামলায় মিল্টন সমাদ্দার কারাগারে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৪২ পিএম, ০৯ মে ২০২৪
মানবপাচার মামলায় মিল্টন সমাদ্দার কারাগারে

মানবপাচার আইনে করা মামলায় ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’র চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) চারদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত ৫ মে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তার শুনানি শেষে আসামির চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওইদিন প্রতারণার মাধ্যমে আশ্রমের মৃতব্যক্তিদের জাল মৃত্যুসনদ দেওয়ার অভিযোগে করা পৃথক মামলায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

তারও আগে গত ১ মে রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরদিন ২ মে মিরপুর মডেল থানায় প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। মামলায় মিল্টনের সহযোগী কিশোর বালা নামে একজনকে আসামি করা হয়।

এ মামলায় ওইদিনই (২ মে) মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে আটকের রাতেই (১ মে) মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মিরপুর মডেল থানায় মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মামলা করেন ধানমন্ডির বাসিন্দা এম রাকিব (৩৫)।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি শেরে বাংলানগর থানার ধানমন্ডি বয়েজ স্কুলের সামনে দুই বছরের এক শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তিনি থানায় ফোনকল করেন। কিন্তু থানা পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’-এ ফোনকল করলে মিল্টন সমাদ্দার ওই শিশুকে নিয়ে যান। তখন বাদী নিজেও তাদের সঙ্গে যান।

মিল্টন সমাদ্দার তাকে (বাদী) অজ্ঞাতনামা শিশুর অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করেন। পরে মিল্টন সমাদ্দারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে’ ভর্তি করা হয়। পরে মিল্টন সমাদ্দার জানান, আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে দত্তক নেওয়া যাবে।

এভাবে কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর হঠাৎ একদিন ফোনকল করে মিল্টন সমাদ্দার বাদীকে গালিগালাজ করেন এবং বলেন বাদী যেন তার প্রতিষ্ঠানে আর না যান। আর যেন শিশুটির খোঁজখবর না নেন।

বাদীর অভিযোগ, এরপর আরও বেশ কয়েকজন ফোনকল করে আমাকে হুমকি দেন ও ভয়ভীতি দেখান। প্রাণভয়ে আমি আর সেখানে যাইনি। সম্প্রতি একটি খবর চোখে পড়ার পর গত ২৪ এপ্রিল ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। শিশুটি কোথায় আছে, সে ব্যাপারেও সদুত্তর মেলেনি। বাদীর অভিযোগ, শিশুটিকে পাচার করা হয়েছে।

জেএ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।