ভিডিওতে বিচারককে হেয়, হাইকোর্টে ক্ষমা চাইলেন খুলনার পিপি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২০ পিএম, ০৭ মে ২০২৪
ফাইল ছবি

আদালত অবমাননা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচারকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হেয় প্রতিপন্নমূলক বক্তব্য সম্বলিত ভিডিও প্রকাশের ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম পলাশ।

মঙ্গলবার (৭ মে) সশরীরে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

তবে আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি না দিয়ে আবারও উপস্থিত হতে এবং এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১১ জুন দিন ঠিক করেন।

আদালতে এদিন পিপির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এম. সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। আর বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খোন্দকার রেজা-ই রাকিব।

এর আগে ৩১ মার্চ জহিরুল ইসলাম পলাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধান বিচারপতি বরাবর চিঠি দেন খুলনা মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক তরিকুল ইসলাম। সেই প্রেক্ষিতে তাকে তলব করেন হাইকোর্ট।

চিঠিতে বলা হয়, একটি মামলার শুনানি কেন্দ্র করে আদালত কক্ষে আইনজীবী জহিরুল ইসলাম পলাশের সঙ্গে কিছুটা বাকবিতণ্ডা হয়। এ কারণে ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমি মামলাটি না শুনে চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেই।

আরও পড়ুন

তখন জহিরুল ইসলাম পলাশ বলে ওঠেন, ‘আপনি আমাকে না শুনেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন?’

আমি (বিচারক তরিকুল ইসলাম) বললাম, ‘এটা কোর্টের প্রসিডিউর, যেহেতু আপনার সঙ্গে কিছুক্ষণ আগে আমার কিছুটা বাকবিতণ্ডা হলো।’

তখন প্রত্যুত্তরে উচ্চস্বরে জহিরুল ইসলাম পলাশ বললেন, ‘আপনার চেয়ে আমি এই বারে আগে এসেছি। আমি প্রসিডিউর ভালো বুঝি। আপনার ব্যবহার সবচেয়ে খারাপ। আপনি অনিয়ম করেন। আমরা খুলনা বারে ২০০০ জন, আর আপনারা মাত্র ৫০ জন। আমি আপনাকে চিনি। আপনার বাড়ি চিতলমারী। আমার বাড়িও চিতলমারী। আমি... (অমুক) এর ছেলে। আপনাকে আমি ভালো করে চিনি। আপনার বিরুদ্ধে আমি চিফ জাস্টিসের কাছে যাবো। আপনি আমাকে ইংলিশ শোনান। বারের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারিতে কাজ হবে না। এমন অনেক বিচারক ছিলেন যারা এখান থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ারও সময় পান নাই, এটা মনে রাইখেন। আপনি আপনার ফিউচারের জন্য প্রস্তুত থাকেন।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, জহিরুল ইসলাম পলাশ উচ্চস্বরে এমন বক্তব্য দেওয়ার পর তিনি এজলাস ত্যাগ করেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে বাদীপক্ষের আইনজীবীর এমন আচরণে বিব্রতবোধ করায় মামলাটি খুলনার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য প্রেরণ করি।

চিঠিতে বিচারক বলেন, আইনজীবী জহিরুল ইসলাম পলাশ সেদিনই ফেসবুক লাইভে আসেন এবং আদালতে ঘটে যাওয়া ঘটনার সত্যতা ও কোর্ট প্রসিডিউরকে পাশ কাটিয়ে বিষয়টি ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেন। তিনি আমাকে দুর্নীতিবাজসহ আরও অনেক বিষয়ে মিথ্যা, বানোয়াট এবং সম্মানহানিকর বক্তব্য দেন।

এফএইচ/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।