গরু চুরির মামলার রায় দেশের সব থানায় পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২৪

৩১ বছর আগে করা গরু চুরির মামলার রায় এসেছে। রায়ে আসামি তোফাজ্জল হোসেনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলার এজাহার দাখিল, গ্রহণ ও তদন্তে অবহেলা এবং অনিয়ম হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। একই সঙ্গে এ মামলার রায় দেশের সব থানা ও অধস্তন আদালতের বিচারককে পাঠাতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্ট রায়ে বলেন, নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও দায়রা জজ আদালত গতানুগতিকভাবে রায় দিয়েছেন। সাক্ষ্য ও নথী পর্যালোচনায় দেখা গেছে, উভয় আদালত চরম অবহেলা ও অনিয়ম করেছেন, যা বিচারক সুলভ আচরণ নয়।

রায়ে আদালত আর বলেন, মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে যার গরু চুরি হয়েছে তার থেকে পুলিশই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, এটা খুবই দুঃখজনক।

হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ শনিবার (৩০ মার্চ) ১২ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করেন। যাতে নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট ও দায়রা জজ আদালতের রায় বাতিল করে তোফাজ্জল হোসেনকে বেকসুর খালাস দেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে অবগতি ও পর্যালোচনার জন্য এ রায় ও আদেশের অনুলিপি অধস্তন আদালতের সব বিচারককে মেইলের মাধ্যমে পাঠানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন।

একই সঙ্গে রায় ও আদেশের অনুলিপি বাংলাদেশের প্রত্যেক থানার সব এজাহার গ্রহণকারী ও তদন্তকারী কর্মকর্তাদের পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলা হয়।

এছাড়া রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রায় ও আদেশের অনুলিপি দেশের বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তিন দশক আগে ১৯৯৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি শ্রী মানিক চন্দ্র রায় তাদের পাঁচটি গরু চুরির অভিযোগে নীলফামারী থানায় মামলা করেন। তখন পাঁচটি গরুর আনুমানিক দাম ধরা হয় ১১ হাজার ৭০০ টাকা। মামলায় সাইফুল ইসলাম ও তোফাজ্জাল হোসেনকে আসামি করা হয়। পরে সাইফুল ইসলাম, তোফাজ্জাল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন এই তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই দবির উদ্দিন।

সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সাইফুল ও দেলোয়ারকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আসামি মো. তোফাজ্জল হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০০ টাকা জরিমানা করেন।

পরে ২০০৬ সালের ৩১ জানুয়ারি নীলফামারীর দায়রা জজ আদালত বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন দায়ের করেন তোফাজ্জল হোসেন। রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট উভয় আদালতের রায় ও আদেশ বাতিল করেন। সেই রায় আজ প্রকাশ করা হয়।

এফএইচ/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।