সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্বাচন চেয়ে রিট
ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যানকে লাখ টাকা জরিমানা

সংসদ ভেঙে দিয়ে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্বাচন চেয়ে পুনরায় তফসিল ঘোষণার রিট খারিজের বিরুদ্ধে যে আপিল হয়েছিল, তা খারিজ করে দিয়েছেন চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে রিটকারী ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াতকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা এক সপ্তাহের মধ্যে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামকে দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ।
আদালত বলেছেন, একই বিষয়ে এর আগে একাধিক রিট হয়েছে। উচ্চ আদালতে বিষয়টি সেটেলড হয়ে আছে। এছাড়া সংবিধানেও সংসদ ভেঙে দেওয়ার বিধান নেই।
এর আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে এবং সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পুনরায় তফসিল চেয়ে হাইকোর্টে ১০ ডিসেম্বর রিট করে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ।
রিট আবেদনে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন। এতে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, লেজিসলেটিভ সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) বিবাদী করা হয়।
এরপর ২০ ডিসেম্বর রিট উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। তখন বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি বিশ্বজিত দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।
এরপর রিট খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের পক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ এ আবেদন করেন।
এর আগে ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি বিশ্বজিত দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ বিষয়ে রিট শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শিব্বির আহমেদ।
তখন আদালত বলেছিলেন, এ মুহূর্তে এ ধরনের রিট শুনবো না। এরপর এ বিষয়ে ৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হয়।
সেদিন অ্যাডভোকেট শিব্বির আহমেদ জাগো নিউজকে বলেছিলেন, আদালত ইলেকশন সংক্রান্ত মেটার এখন শুনবেন না।
রিটকারী রাজনৈতিক দল ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত সাংবাদিকদের বলেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। এই রিট আবেদন হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চে শুনানির উদ্যোগ নেবো।
রিটটি যে দিন খারিজ করে দেওয়া হয় সেদিন রিটের পক্ষের আইনজীবী বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনকে লিগ্যাল নোটিশ না পাঠিয়ে সরাসরি রিট করায় হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ কারণে ২১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। এরপর ২৬ ডিসেম্বর ফের রিট করা হয়।
এছাড়া ইনসানিয়াত বিপ্লবের চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত বলেছিলেন, গত নির্বাচনে আমরা দেখেছি ক্ষমতাসীন সংসদ সদস্যরা নিজ নিজ আসনে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসন, পুলিশ ও নিজেদের সশস্ত্র লোকদের ব্যবহার করে ভোটকেন্দ্র দখল ও অন্যদের ভোট প্রদানে বাধার সৃষ্টি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সংসদ বহাল রেখে জালিয়াতিমুক্ত নির্বাচন অসম্ভব। প্রহসনমুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষায় আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের আদেশ চেয়ে রিট করেছি।
৮ মে উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইসির নিবন্ধন পায় ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ। ইসিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের নিবন্ধন নম্বর ৪৬। দলটির নির্বাচনী প্রতীক আপেল।
এফএইচ/জেডএইচ/জিকেএস