সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র পদে বহাল থাকছেন তাজকিন
সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদের পদটি শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গেজেটের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে তাজকিন আহমেদ সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র পদে আপাতত বহাল থাকছেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে কাজী ফিরোজ হাসানের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন। আর মেয়রের রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
২৯ জানুয়ারি মধ্যে আবেদনকারীকে পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ কাজী ফিরোজ হাসানকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়।
১১ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদের পদটি শূন্য ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের গেজেট স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
গেজেট চ্যালেঞ্জ করে তাজকিন আহমেদের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দেন।
ফলে তার দায়িত্ব পালনে আপাতত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। তাজকিন আহমেদ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর বিএনপির সদস্য সচিব। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিলেন প্যানেল মেয়র ফিরোজ হাসান।
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া এবং বিধিবহির্ভূতভাবে পৌরসভার ভাগ্যকূল মিষ্টান্ন ভাণ্ডার সংলগ্ন জমিতে মার্কেট নির্মাণের দরপত্র আহ্বানসহ ১০ দফা অভিযোগ উল্লেখ করে পৌরমেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে ১২ কাউন্সিলর আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন।
ডিসি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৩ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পালকে নির্দেশ দেন। নির্দেশ মতো তিনি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর পৌরমেয়র তাজকিন আহমেদকে ‘অনাস্থা প্রস্তাব’র পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় কার্যধারা কেন নেওয়া হবে না মর্মে এই চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
কিন্তু তাজকিন আহমেদ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের চিঠির জবাব নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে না দেওয়ায় কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানকে (ভারপ্রাপ্ত মেয়র) অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কিত সভা ডাকার আহ্বান জানান।
১৮ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে সাতক্ষীরা পৌরসভা পরিষদকক্ষে ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসানের সভাপতিত্বে সভায় ১২ কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত ১১ জনই অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। তবে ওই সভায় পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন না। এরপর ২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর–১ শাখার উপ-সচিব আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়রের পদটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর হাইকোর্টে গেজেটের বৈধতা নিয়ে রিট করেন মেয়র তাজকিন।
এফএইচ/জেডএইচ/জিকেএস