সুপ্রিম কোর্টে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জানাজা অনুষ্ঠিত

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

অডিও শুনুন

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের দ্বিতীয় জানাজা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) বেলা দুটার দিকে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বারিধারা জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুপুর ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মরদেহ নিয়ে আসা হয়।

মইনুল হোসেনের ভাগনে মুহিবুল আহসান বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় বারিধারা মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জোহরের নামাজ শেষে বেলা দুটার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর নিউনেশন পত্রিকা অফিসে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে, তারপরে আজিমপুর কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে শায়িত করা হবে।

এর আগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মইনুল হোসেনের মৃত্যুতে তার প্রতি সম্মান জানিয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক কাজ বন্ধ রাখা হয়।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র এ আইনজীবীর জানাজায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ(এ এম) আমিন উদ্দিন, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আমীর উল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নুর দুলাল, সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী, ব্যারিস্টার রবদরোদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুল্লাহ, মইনুল হোসেনের ছোট ভাই সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্যসহ আইনজীবী ও সাংবাদিকরা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেন গতকাল শনিবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে মারা যান। প্রখ্যাত সাংবাদিক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার বড় ছেলে মইনুল হোসেনের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। ১৯৬৯ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি ইত্তেফাক পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৭৩ সালে ইত্তেফাকের সম্পাদক পদ ছেড়ে দিয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হন। একই বছর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে পিরোজপুরের (তৎকালীন বরিশাল) ভান্ডারিয়া-কাঁঠালিয়া নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অবশ্য ১৯৭৫ সালে সংসদ সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দেন। তিনি নিউ নেশন নামে সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করেছিলেন, যা পরে দৈনিক হয়। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ছিলেন মইনুল হোসেন।

২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্য, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। ২০০৮ সালের ৮ জানুয়ারি তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।

২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর জার্নাল টক শোতে দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি লাইভে যুক্ত হওয়া ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রশ্ন করেন- ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, আপনি সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে এসে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন কি না?’

মইনুল হোসেন এ প্রশ্নের জবাবের একপর্যায়ে মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার শিকার হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে মানহানির মামলা হয় এবং মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। তিন মাসের বেশি সময় কারাগারে থাকার পর ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান।

এফএইচ/জেএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।