রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে রিট খারিজ


প্রকাশিত: ০৮:১৭ এএম, ২৮ মার্চ ২০১৬

সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্মের মর্যাদা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে বাংলাদেশ সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বহাল থাকলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

দীর্ঘ ২৮ বছর আগের করা রিট আবেদন শুনানি না করে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

সোমবার আদালতের শুনানিতে মামলার পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মুঞ্জুরুল করিমসহ ১০ প্রফেসরের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক বিচারপতি টিএইচ খান এবং অ্যাডভোকেট এবিএম নূরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। অপরদিকে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দার আফ্রিক।

রায় দেয়ার আগে আদালত বলেছেন, রিটকারী সংগঠন (স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটি) সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে রিট করার অধিকার রাখে না। পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা সাংবাদিকদের বলেন, রিট আবেদন সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখান করেছেন আদালত এবং সংগঠনটি রিট আবেদন করার যোগ্যতা রাখে না। তাই এই রিটের কোন গুরুত্ব ছিল না তাই তা খারিজ করা হয়েছে।  তিনি বলেন, এ ছাড়া সকল আদেশের বিষয়ে মূল রায়ের কপি পাওয়ার পর বলা যবে।  

অন্যদিকে রিটকারী সংগঠনের পক্ষের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, আদালত কোন যুক্তিতে খারিজ করেছে আমার জানা নেই। তবে রায়ের মূল কপি পাওয়ার পরে চিন্তাভাবনা করা হবে আপিল করবো কি না।

রায় দেয়ার আগে সোমবার সকাল ১১টার দিকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল নিয়ে হাইকোর্ট যাতে রিট শুনানি না করেন এবং এর বিরুদ্ধেও যেন কোন প্রকার রায় না দেয় তার জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবর স্বারক লিপি দিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম।

তার আগে ওই রিট আবেদনকে ‘দেশকে ধর্মহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত’ আখ্যায়িত করে জামায়াতে ইসলামী সোমবার সারাদেশে হরতাল আহ্বান করেছিল।

উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে ৫ জুন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম জাতীয় সংসদে পাশ করা হয়। সংশোধনীতে ২(এ) সংযুক্ত করে বলা হয়- ‘রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে।’

একই বছরের ৯ জুন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মধ্য দিয়ে এটা আইনে পরিণত হয়। যা সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী নামে পরিচিত। ওই বছরের আগস্টে ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটি’র পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেনসহ (প্রয়াত) দেশের ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। দীর্ঘ ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ জুন হাইকোর্টে একই বিষয়ে আবারো সম্পূরক আরো একটি আবেদন করে রিটের শুনানির আবেদন করা হয়। পরে ওই আবেদনে শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করেন। 

এফএইচ/জেএইচ/আরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।