অর্থ ফেরত পেতে পারেন ইভ্যালির প্রকৃত পাওনাদাররা: হাইকোর্ট
গ্রাহকের অর্থ নিয়ে আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির অবসায়ন ও পাওনা অর্থ ফেরত চেয়ে রিট মামলায় পক্ষভুক্ত হতে চাওয়া এক গ্রাহকের পক্ষে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। সম্প্রতি এ রিট খারিজ করে আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। হাইকোর্টের বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর একক বেঞ্চ এমন পর্যবেক্ষণ দেন। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ই-ভ্যালি নিয়ে মামলা পরিচালনাকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন।
আইনজীবীরা বলেন, যদি আবেদনকারী একজন পাওনাদার হিসেবে প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে তার দাবি কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর প্রাসঙ্গিক বিধানের অধীনে বাস্তবায়িত হবে। তাকে রিট মামলায় পক্ষভুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই।
হাইকোর্ট বলেছেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির কোনো গ্রাহক যদি প্রকৃত পাওনাদার হিসেবে প্রমাণিত হন তাহলে ১৯৯৪ সালে কোম্পানি আইনের অধীনে সেটা আদায়যোগ্য। তিনি পাওনা পেতে পারেন। তবে, এ মুহূর্তে তা ফেরত চেয়ে রিটে কোনো আবেদনকারীকে পক্ষভুক্ত করলে ফ্লাডগেট খুলে যাবে। এতে সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যাবে। তাই আবেদনটি খারিজ করা হলো।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, যদি আবেদনকারীকে এ রিট মামলায় পক্ষভুক্ত করা হয়, তাহলে ফ্লাডগেট খুলে যাবে। অসংখ্য গ্রাহক আদালতে এ ধরনের আবেদন নিয়ে আসবে। এতে সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যাবে। মূল রিট মামলার যথাযথ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে যা বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই খারিজ করেছেন আদালত।
হাইকোর্ট আবেদনকারীকে আশ্বস্ত করে আদেশের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে আবেদনকারী যদি পাওনাদার হন এবং তা প্রমাণিত হয়, তাহলে কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর বিধান অনুযায়ী আবেদনকারী পাওনা পেতে পারেন। তার দাবি আদায়যোগ্য হতে পারে। তবে, এ মুহূর্তে তা চেয়ে আবেদন বিবেচনাযোগ্য নয়।
এ বিষয়ে মূল রিট মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাসুম ও ব্যারিস্টার মাহাসিব হোসেন শুনানিতে বলেন, যদি আবেদনকারী একজন পাওনাদার হিসেবে প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে তার দাবি কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর প্রাসঙ্গিক বিধানের অধীনে বাস্তবায়িত হবে। তাকে রিট মামলায় পক্ষভুক্ত করার কোনো প্রয়োজন নেই।
ব্যারিস্টার মাহসিব হোসেন বলেন, শেষ পর্যন্ত যদি কোম্পানিটি অবসায়ন হয় সেক্ষেত্রে আবেদনকারী তাদের পাওনা দাবি করে লিকুইডেটরের (কোম্পানির বিষয় দেখাশোনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি) কাছে যাবেন এবং আবেদনকারী তার পাওনা কোম্পানি আইনের বিধান অনুযায়ী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পেতে পারেন।
গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এ সংক্রান্ত রিট করা হয়, আদালত রায় দেন ২৩ জুলাই। আর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে গত ১৬ অক্টোবর (সোমবার)।
আবেদনকারী মো. মোহসিন হোসেন ইভ্যালির অনলাইন শপিংয়ের ওয়েবসাইটে একটি গ্রাহক অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং একটি বাজাজ পালসার নিয়ন মোটরবাইক কেনার অর্ডার দেন। সেই অনুযায়ী ৯৭ হাজার ৪৪৮ টাকা পেমেন্ট করেন। কিন্তু পরে বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া থেকে জানতে পারেন যে, ইভ্যালি কোম্পানি তার গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে জনসাধারণের অর্থ প্রতারণা করেছে।
আবেদনে আরো বলা হয়েছে, বিদ্যমান আবেদনকারী এবং আবেদনকারী মো. মোহসিন হোসেনের মধ্যে স্বার্থের কোনো দ্বন্দ্ব নেই এবং বিরোধের যথাযথ বিচারের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে আবেদনকারীকে পক্ষভুক্ত যুক্ত করা উচিত। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা ও অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান।
এফএইচ/এমএএইচ/জিকেএস