খাকদোন নদের জায়গা ইজারা
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিবসহ তিন কর্মকর্তার ব্যাখ্যা তলব
বরগুনার খাকদোন নদ দখল করে ইজারা দেওয়ায় ঘটনায় সাবেক জেলা প্রশাসকসহ (ডিসি) তিন কর্মকর্তার ব্যাখ্যা তলব করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত। বরগুনার সাবেক ডিসি হাবিবুর রহমান বর্তমানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব।
আর বাকি যাদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে তারা হলেন বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পীযূষ চন্দ্র দে ও বরগুনা সদর উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা কাওসার হোসেন (বর্তমানে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক)।
ইজারা কার্যক্রমে হাইকোর্টের দেওয়া স্থিতাবস্থা স্থগিত চেয়ে ইজারাদার জহিরুলের করা আবেদনে শুনানির নিয়ে রোববার (১৫ অক্টোবর) আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের চেম্বারজজ আদালত এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: বরগুনার খাকদোন নদীর সীমানা জরিপ করার নির্দেশ
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। আর রিটকারীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
এর আগে ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘১৫০ দখলদার/বরগুনার খাকদোন নদ খেয়ে ফেলছেন তারা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ প্রতিবেদন সংযুক্ত করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ -এইচআরপিবি’র পক্ষে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট করা হয়। খাকদোন নদের দখল উচ্ছেদ ও নদের সীমানা নির্ধারণে জরিপের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।
প্রাথমিক শুনানির পর ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশে আদালত খাকদোন নদের জায়গা জরিপ করে অবৈধ দখলদার ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন। পরে আদালতের নির্দেশে ২২ মার্চ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। কিন্তু উচ্ছেদের পর গত ৩ জুলাই সে জায়গা আবার ইজারা দেন বরগুনার জেলা প্রশাসক।
আরও পড়ুন: নদী দখল-দূষণের শাস্তি কঠোর হচ্ছে, ক্ষমতা বাড়ছে কমিশনের
বিষয়টি নিয়ে ২৯ আগস্ট আবারো একই দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় ‘ইজারা সাত লাখে, লেনদেন আট কোটি টাকা’ শিরোনামে। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে এবার ওই রিটে সম্পূরক আবেদন করে রিটকারী পক্ষ। শুনানির পর ৩১ আগস্ট হাইকোর্ট ইজারা কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা জারির পাশাপাশি রুল দেন। হাইকোর্টের এই স্থিতাবস্থা স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন বরগুনা বনিক সমিতির নেতা জহিরুল হক পনু।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, সে আবেদনে শুনানির পর চেম্বার আদালত স্থিতাবস্থার আদেশে কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। যা ২০ নভেম্বর শুনানির জন্য রাখা হয়।
এ আইনজীবী বলেন, নদ-নদীর জায়গা ইজারা দেওয়া যাবে না মর্মে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু বরগুনার জেলা প্রশাসক খাকদোন নদের জায়গা ইজারা দিয়েছেন। বিষয়টি তুলে ধরার পর চেম্বার আদালত ইজারার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। ২০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের এ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এফএইচ/জেডএইচ/জেআইএম