তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:১৪ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২৩
ফাইল ছবি

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা দেওয়ার নির্দেশের বিরুদ্ধে বাস মালিকদের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে।

এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আপিল বিভাগ। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।

বুধবার (১১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়। আদালতে আজ বাস মালিকপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। এ সময় তারেক মাসুদের ও ব্লাস্টের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।

এর আগে ২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ তারেক মাসুদের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা ক্ষতিপূরণ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বলা হয়, যারা এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী, মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য দায়ী, তাদের এখন ৪ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা দিতে হবে তারেক মাসুদের পরিবারকে। গাড়ির চালক দেবেন ৩০ লাখ, তৃতীয়পক্ষের ক্ষতির জন্য ইনস্যুরেন্স মালিককে (রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স) দিতে হবে ৮০ হাজার টাকা এবং বাদ বাকি টাকা দেবেন বাস মালিকরা। এ টাকা দিতে হবে ছয় মাসের মধ্যে।

পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে দুই পক্ষ। ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ হাইকোর্টে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। সাক্ষ্যে তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ মোট ৭ কোটি ৭৬ লাখ ২৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা বলেন।

আদালতে ক্যাথরিন মাসুদের পক্ষে সাতজন, বাস মালিক সমিতির পক্ষে পাঁচজন ও রিলায়েন্স ইনস্যুরেন্স কোম্পানির পক্ষে একজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ এবং এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন। দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর ছাড়া নিহত হন মাইক্রোবাসের চালক মোস্তাফিজুর রহমান, প্রোডাকশন সহকারী ওয়াসিম হোসেন ও জামাল হোসেন। আহত হন তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, শিল্পী ঢালী আল মামুন ও তার স্ত্রী দিলারা বেগম জলি। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে।

এরপর ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জে মোটরযান অর্ডিন্যান্সের ১২৮ ধারায় বাস মালিক, চালক ও ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে দুটি মামলা করেন।

সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে এ দুটি মামলা হাইকোর্টে বদলির নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করা হয়।

তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ এবং মিশুক মুনীরের স্ত্রী কানিজ এফ কাজী ও ছেলে সুহৃদ মুনীর দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এ রুলের শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর দুই আবেদন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে তারেক মাসুদের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। অন্যটি হাইকোর্টে বিচারাধীন।

এফএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।