ক্ষমা চাইলেন আম্পায়ার চিনু, মামলা তুলে নেবেন রকিবুল
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানহানিকর বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমান ওরফে চিনুর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসান। গত ৩১ আগস্ট ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে এ মামলা করা হয়। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫ ও ২৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
বিসিবির বর্তমান চিফ ম্যাচ রেফারি রকিবুলের মামলা দায়েরের পরই বিসিবির মধ্যস্থতায় বিষয়টি আপস মীমাংসার দিকে মোড় নেয়। আলোচনায় বসেন রকিবুল ও চিনু। আলোচনা ফলপ্রসূও হয়। নিজের মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন চিনু। ক্ষমা চাওয়ায় মামলা প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানিয়েছেন রকিবুল।
আরও পড়ুন: আম্পায়ার চিনুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
গত ৩১ আগস্ট মামলা দায়েরের দিনই ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল রকিবুলের জবানবন্দি নেন। একই সঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমকে (সিটিটিসি) তদন্ত করে ২০ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে নিজেদের মধ্যে আপস মীমাংসা হওয়ায় বাদী ও বিবাদী উভয়পক্ষ ২ অক্টোবর আদালতে উপস্থিত হয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করবেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, রকিবুল হাসানকে নিয়ে ‘মানবতা আজ কোথায়’ নামের পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। পোস্টের হেডলাইন হলো, ‘চোর যখন নীতিবাক্য শোনায়’। ভিডিওটি সুব্রত চৌধুরী নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার করা হয়। সেই পোস্টে কমেন্ট করেন বিসিবির ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমান চিনু। তিনি কমেন্টে বলেন, দাদা, এ লোকটার উত্থানের পেছনে তোমাদের অবদানই বেশি। উনি বীর মুক্তিযোদ্ধা কখনো ছিলেন না! অথচ মিডিয়ার কল্যাণে ৫০ বছর পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম??? কি বিচিত্র এই দেশ! সেলুকাস...)।
গত ১৫ আগস্ট ওই পোস্টের নিচে এমন কমেন্ট করেন চিনু। এ ধরনের মিথ্যা ও অসৌজন্যমূলক মন্তব্যে তার (রকিবুলের) ব্যক্তি ও পেশাগত জীবনে অর্জিত সুনামের ক্ষতি করা হয়েছে বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন বাদী।
আরও পড়ুন: চিনুকে লিগ্যাল নোটিশ রকিবুলের
এরপর গত ২০ আগস্ট চিনুকে তার মন্তব্য দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার করে এ নিয়ে জনসমক্ষে ক্ষমা চাইতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান রকিবুল হাসান। নোটিশের অনুলিপি বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং আম্পায়ারস কমিটির চেয়ারম্যানকেও পাঠানো হয়। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পরও ক্ষমা না চাওয়ায় মামলা করা হয়েছে বলে আর্জিতে উল্লেখ করেন রকিবুল।
এ বিষয়ে রকিবুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যস্থতায় আমরা মামলা নিয়ে আপস মীমাংসা করি। চিনু বিষয়টি নিয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। ক্ষমা চাওয়ায় আমিও মামলাটি প্রত্যাহার করে নেবো।
অন্যদিকে শওকাতুর রহমান চিনু জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। গত ২৫ সেপ্টেম্বর আমরা এ নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। আমি অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছি। আগামী ২০ নভেম্বর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য রয়েছে। ২ অক্টোবর মামলাটি প্রত্যাহার করে নেবেন রকিবুল।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়ে গর্বিত রকিবুল
রকিবুলের আইনজীবী আল মামুন রাসেল জাগো নিউজকে বলেন, ফেসবুকে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্যাপ্টেন ও বর্তমান চিফ ম্যাচ রেফারি বীর মুক্তিযোদ্ধা রকিবুল হাসানকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্য করায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ম্যাচ রেফারি শওকাতুর রহমান চিনুর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। পরবর্তীসময়ে বিসিবির মধ্যস্থতায় মামলার বাদী রকিবুল ও আসামি চিনুর মধ্যে এ নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে ভুল বোঝাবুঝির বিষয়টি উভয়পক্ষ স্বীকার করে। আম্পায়ার চিনু অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। আগামী ২ অক্টোবর রকিবুল হাসান ও চিনু আদালতে উপস্থিত হবেন। এদিন রকিবুল মামলা প্রত্যাহার করে নেবেন।
জেএ/এমকেআর/জেআইএম