হেফাজতের তাণ্ডব

আদিলুর-এলানের বিরুদ্ধে রায়ের কপির অপেক্ষায় আইনজীবী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৭ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে অভিযান নিয়ে তথ্য বিকৃতির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস ম নাসির উদ্দিন এলানের দুই বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করা হবে। তার প্রস্তুতিও রয়েছে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন আইনজীবী রুহুল আমিন ভূঁইয়া।

তবে, আপিল করার আগে বিচারিক (নিম্ন) আদালতের রায়ের অনুলিপি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। রায়ের অনুলিপি পেলেই হাইকোর্টে আপিল করা হবে এবং পাশাপাশি জামিন চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন>আমরা ন্যায়ের জন্য কাজ করেছি: আদিলুর 

মঙ্গলবার (১৯সেপ্টেম্বর) আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, রায় ঘোষণার দিনই আদালতে রায়ের অনুলিপির জন্যে আবেদন জমা দিয়ে রেখেছি। এখন শুধু অপেক্ষা করা হচ্ছে কবে রায়ের অনুলিপি হাতে আসে।

তিনি আরও বলেন, নিয়ম অনুযায়ী, রায় ঘোষণার এক মাসের মধ্যে আপিল আবেদন করা যাবে। অর্ডারের কপি পাওয়া থেকে দিন গণনা করে ৩০ দিন অর্থাৎ এক মাসের মধ্যে আপিল আবেদন করা হবে। সে হিসেবে আমরা আবেদন করার পর থেকে রায়ের কপি পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। আগামীকাল, বুধবার রায়ের অনুলিপি হাতে আসতে পারে।

২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে হেফাজত ইসলামের সমাবেশে অভিযান নিয়ে তথ্য বিকৃতির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা মামলায় মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্র ও সংগঠনটির পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের ২ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন। এটা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের প্রথম মামলা।

২০১৩ সালে ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলাম সমাবেশ করে। পরে সমাবেশস্থলে রাত্রিযাপনের ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা। তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হয় বলে দাবি করেছিল অধিকার।

তবে, সরকারের ভাষ্য সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি। শাপলা চত্বরে অভিযানের পর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন ডিবির তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল ইসলাম।

আরও পড়ুন> আদিলুর-এলানের সাজা/ রায় ঘোষণার সময় আদালতে ছিলেন বিদেশি পর্যবেক্ষক 

তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার আদালতে আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশন দেন আদালত।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে।’

‘পাশাপাশি তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করে, যা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ও (২) ধারায় অপরাধ। একইভাবে ওই আসামিরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চালায় এবং সরকারকে অন্য রাষ্ট্রের কাছে হেয় করার চেষ্টা চালায়, যা ফৌজদারি কার্যবিধির ৫০৫ সি ও ডি এবং ৫০৫ এ ধারায় অপরাধ।’

এফএইচ/এসএনআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।