ড. ইউনূসকে নিয়ে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি

কাউকে খুশি করতে এমরান এসব কথা বলেছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১০ পিএম, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন

ড. ইউনূসের বিপক্ষে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার বক্তব্যের পেছনে কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেলের নিজ কার্যালয়ে তিনি এ কথা জানান। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমার সঙ্গে কথা না বলে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেওয়া মানে কাউকে খুশি করার জন্য তিনি এসব কথা বলেছেন।’

এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি উনাকে সই করতে বলিনি। আমি কোনোদিনও কোনো এক কর্মকর্তা বা কাউরে বলি নাই যে, আপনি এটাতে সই করেন বা না করেন। আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি, আমার অফিসে এ ধরনের কোনো স্টেটমেন্ট রেডি হয়নি।

তিনি বলেন, ড. ইউনূসের পক্ষে ১৬০ জনের বিবৃতির প্রথম দিনেই অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বলে দিয়েছি, উনারা (ইউনূসের পক্ষে) যে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন তা সঠিক হয়নি কারণ তারা জানতেন না- সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক তাদের (ড. ইউনূসের) আবেদন দুবার প্রত্যাখ্যান হয়েছে। সর্বোচ্চ বিচারিক আদালত যখন বলে এটা হবে তখন প্রশাসনিকভাবে কেউ প্রত্যাহার করতে পারেন না। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি যারা ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন তারা এটা জানেন না। সে কারণে আমি প্রথমদিনই বলে দিয়েছি।

আরও পড়ুন>> ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে সই করবেন না ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলার পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের কি আর স্বাক্ষর করার প্রয়োজন আছে? আপনারা কী মনে করেন? আমি তো নিজেই এই অফিস থেকে বলে দিয়েছি। আমি বলা মানেই তো অ্যাটর্নি জেনারেল বলা। তারপরও বলছি- সবাইকে স্বাক্ষর করতে হবে এই কথা আমি বলিনি। এটা বলার কোনো প্রশ্নই আসে না।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় কথা হলো- তার যদি এটা মনে হয়, যে আমি সাবইকে স্বাক্ষর করতে বলেছি, তাহলে তিনি তো আমার কাছে জানতে চাইতে পারতেন, আমি এমন কোনো নির্দেশনা দিয়েছি কি না। তিনি তো জানতে চাননি। তার মানে কী? তিনি আমার কাছে জিজ্ঞেস না করেই কীভাবে জানলেন আমি বলেছি স্বাক্ষর করতে।

কাউকে খুশি করার জন্য ডিএজি এমনটি করেছেন উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কাল তো ওনার ছুটি ছিল, তার তো কোনো ডিউটি ছিল না। ওনি স্যুট টুট পরে চলে এসেছেন। তিনি টিভির সামনে গিয়ে কী কারণে ব্রিফিং করলেন, কেন করলেন, কোন উদ্দেশ্যে করলেন সেটা আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন। কাকে খুশি করার জন্য তিনি এসব কথা বলেছেন।

ওনি তো বলেছেন, হোয়াটসঅ্যাপে নির্দেশনা গেছে- এমন প্রশ্ন করলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি তো বললাম, উনি আমার সঙ্গে কথা বলবেন না। ওনার কোনো উদ্দেশ্য আছে।

এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি তো তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ না। আমি তো অ্যাপয়েনটেন্ট না। এটা সবাই ওয়াকিবহাল।

আরও পড়ুন>> ড. ইউনূসের বিপক্ষে লড়বেন না খুরশীদ আলম খান

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ ১৬০ বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তির প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া খোলাচিঠির পক্ষে অবস্থান নেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তাতে তিনি সই করবেন না বলে জানিয়ে দেন।

এমরান আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানানো হয়। যেখানে সোমবার বিকেল ৪টার মধ্যে বিবৃতি সই করার কথা বলা হয়। তবে, আমি ব্যক্তিগতভাবে সই করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি সই করার সঙ্গে একমত নই।’

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ড. ইউনূসের বিষয়ে যে বিবৃতি ও পাল্টা বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে সেটির প্রয়োজন নেই। ওনার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো চলছে তা অন্যভাবে ডিল করা যেতো। এটা ওনাকে চাপে রাখার জন্যই করা হচ্ছে বলে মনে হয়েছে। উনি বাংলাদেশের জন্যই যে শুধু সম্মান বয়ে এনেছেন তা কিন্তু নয়, উনি সারা বিশ্বের সম্পদ।’

এফএইচ/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।