ধর্ষণ মামলা
টাঙ্গাইলের বড় মনির ও তার স্ত্রীর জামিন আপিলেও স্থগিত
ধর্ষণ মামলায় টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনির ও তার স্ত্রী নিগার আফতাবকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তার জামিন ৯ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
সোমবার (২১ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। বড় মনিরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এম. সাঈদ আহমেদ রাজা।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ বলেন, আসামিদের পরিবারটি শক্তিশালী হওয়ায় ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার বঞ্চিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে ডিএনএ স্যাম্পলও নিতে দিচ্ছে না। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেনবড় মনিরের আইনজীবী।
পরে আইনজীবীরা জানান, আপিল বিভাগ ৯ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের জামিন স্থগিত করেছেন। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে (আইও) এ সময়ের মধ্যে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বড় মনির ও তার স্ত্রী নিগার আফতাব ধর্ষণ মামলায় হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছিলেন। গত ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি ইকবাল কবির ও বিচারপতি এ কে ফা এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল গোলাম কিবরিয়া বড় মনির ও তার স্ত্রী হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন।
এর পরে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় টাঙ্গাইলের বড় মনির ও তার স্ত্রীর জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালত।
গত ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। মামলায় ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়। মামলায় গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা বলে প্রমাণ পেয়েছে মেডিকেল বোর্ড। মামলা হওয়ার পরদিন ওই কিশোরী আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন।
মামলায় ওই কিশোরী (১৭) অভিযোগ করেন, গোলাম কিবরিয়া তার পূর্বপরিচিত। গত ১৭ ডিসেম্বর তাকে শহরের আদালত পাড়ায় নিজের বাড়ির পাশের একটি ভবনে গোলাম কিবরিয়া ডেকে নেন। সেখানে তাকে ধর্ষণ করেন ও আপত্তিকর ছবি তুলে রাখেন। পরে আপত্তিকর ওই ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় বলে ওই কিশোরী মামলায় অভিযোগ করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, একপর্যায়ে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি গোলাম কিবরিয়া জানার পর সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে কিশোরী রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ তাকে শহরের আদালত পাড়ায় গোলাম কিবরিয়ার শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে ওই কিশোরীকে গোলাম কিবরিয়া আবার ধর্ষণ করেন।
এর আগে, ধর্ষণ মামলায় বড় মনিরের হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন চেম্বারজজ আদালত। একই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া নবজাতকের ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ দেন আদালত। ২১ আগস্ট ডিএনএ টেস্টের রেজাল্ট আপিল বিভাগে দাখিল করতে বলা হয়েছিল।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী। আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
গত ১১ জুলাই বড় মনিরকে জামিন দেন বিচারপতি শেখ জাকির হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এফএইচ/এসএনআর/এএসএম