আদালতে ধাক্কাধাক্কি-ভাঙচুর
আওয়ামীপন্থিদের মামলায় আসামি ১৮, অভিযোগ বিএনপিপন্থিদেরও
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপিপন্থি ১৮ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মো. রফিকুল্লাহ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলামসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তারেকের ৯, জোবায়দার ৩ বছরের কারাদণ্ড
অন্যদিকে আওয়ামীপন্থি আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলালসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবীকে বিবাদী করে একটি অভিযোগ দায়েরের খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামীপন্থি আইনজীবী আব্দুন নুর দুলাল জাগো নিউজকে বলেন, বিএনপিপন্থি আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও গাজী কামরুল ইসলাম সজলসহ অনেকের বিরুদ্ধে আমরা শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছি। মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর এবং আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। শাহবাগ থানায় করা মামলার নম্বর ৫।
অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের ওপর হামলার পাল্টা অভিযোগ এনে শাহবাগ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
আরও পড়ুন: আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বিক্ষোভ
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি সাজার রায়ের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সংবাদ সম্মেলন ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির হল রুমে সংবাদ সম্মেলন শুরু করলে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও আব্দুন নুর দুলালের নেতৃত্বে সেখানে প্রবেশ করেন এবং সংবাদ সম্মেলন পণ্ড করার চেষ্টা করেন। পরে আমাদের কয়েকজন নারী আইনজীবীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। অভিযোগ দায়ের করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবী মোছা. জেসমিন জাহান করিম।
ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় গতকাল বুধবার (২ আগস্ট) তারেক রহমানকে দণ্ডবিধির দুই ধারায় ৯ বছর এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তারেককে ৩ কোটি ও জোবায়দাকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে অপ্রদর্শিত সম্পদ হিসেবে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেন বিচারক।
আরও পড়ুন: নেমপ্লেট খুলে বার সম্পাদকের কার্যালয় ভাঙচুর
এ নিয়ে পাঁচটি মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজার রায় দিয়েছেন আদালত। গত প্রায় ১৫ বছর ধরে পরিবার নিয়ে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন তারেক রহমান।
এ রায় ঘিরে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা পাল্টাপাল্টি মিছিল, সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেন। এরই এক পর্যায়ে তারা পরস্পরকে দোষী সাব্যস্ত করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তারেক জোবায়দার মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি করে দুদক।
এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম