রিভিউ না করলে যেকোনো সময় দণ্ড কার্যকর : অ্যাটর্নি জেনারেল


প্রকাশিত: ০৫:৩৪ পিএম, ১৫ মার্চ ২০১৬

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে মতিউর রহমান নিজামী রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদন না করলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর বাধা থাকবে না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। মঙ্গলবার বিকেলে একাত্তরের আলবদর নেতা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর যে বিচার হয়েছে, আজকে সেই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। আগামীকাল থেকে ১৫ দিনের ভিতরে তিনি যদি রিভিউ পিটিশন দায়ের না করেন তাহলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর বাধা থাকবে না।

তিনি বলেন, নিয়ম হলো আপিল বিভাগে মামলা শুনানির পর যদি সবকজন বিচারপতি দণ্ড বা শাস্তির ব্যাপারে একমত হন সেক্ষেত্রে সবার পক্ষ থেকে সচরাচর একজন রায় লেখেন। তাকে বলে অথর জাজ। যার এই দায়িত্ব ছিল তিনি লেখার পর সবকজন বিজ্ঞ বিচারপতি তাতে সই করেছেন। তাদের সই করার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ওয়েবসাইটে আসবে।

এর আগে, একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে এ মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন বিচারিক আদালত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।

পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেছেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ার উল হক এবং বিচারিক প্যানেলের দুই সদস্য বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী।

নিজামীর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়সহ লাল সালুতে মোড়ানো এ পরোয়ানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. শহীদুল আলম ঝিনুক।

ওই মৃত্যু পরোয়ানার ভিত্তিতেই সরকারের তত্ত্বাবধানে কারা কর্তৃপক্ষ সাজা কার্যকরের প্রস্তুতি নেবে। অবশ্য দণ্ড কার্যকরের আগে আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার সুযোগ পাবেন আল বদর প্রধান মতিউর রহমান নিজামী। রিভিউ না টিকলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষাও তিনি চাইতে পারবেন।

দুই আর্জিই নাকচ হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ দণ্ড কার্যকরের ব্যবস্থা নেবে। তার আগে আসামির সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন পরিবারের সদস্যরা।

মঙ্গলবার বিকেলে ১৫৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় লেখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। তার রায়ের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে অন্য বিচারপতিরা স্বাক্ষর করেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে ৩ কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার শহিদুল ইসলাম ঝিনুকের হাতে রায়ের কপিটি পৌঁছে দেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাদের মোল্লার রিভিউ পিটিশনের রায়ে নির্ধারিত হয়ে গেছে যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ আদালতে যে আপিল সেই আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ১৫ দিনের মধ্যে যদি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি রিভিউ না দায়ের করেন, তাহলে এরপর তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো অসুবিধা থাকবে না।

আগামীকাল থেকে ১৫ দিন গুণতে হবে, এর মধ্যে তিনি যদি রিভিউ পিটিশন দায়ের করেন, তবে তা শুনানির প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর যদি তিনি রিভিউ দায়ের না করেন তবে আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে। এবং মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে পরোয়ানা জারির করার যে প্রক্রিয়া আছে সেগুলো অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরো বলেন, ট্র্ইাব্যুনালে রায়ের কপি পৌঁছে গেল হয়তো নিজামীকে জ্ঞাত করা হবে। সাধারণত যেদিন ট্রাইব্যুনালে যায় সেদিনই তাকে জ্ঞাত করা হয়।

এফএইচ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।