সাবেক ডিআইজি প্রিজন বজলুরের ৫ বছরের দণ্ড হাইকোর্টে বহাল
সাময়িক বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) বজলুর রশীদের পাঁচ বছরের দণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বজলুর রশীদের ৫ বছরের দণ্ড ও জরিমানা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। তবে সশ্রম কারাদণ্ডের স্থলে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
এর আগে তিন কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় কারা অধিদপ্তরের সাময়িক বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) বজলুর রশীদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন আদালত।
এছাড়া রাষ্ট্রের অনুকূলে তিন কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকা বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। খালাস চেয়ে করা আপিলের শুনানিতে রোববার (১৮ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ আসামির করা আপিল আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন।
আদালতে আজ দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাসউদুল হক ও অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর উস সাদিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফেরদৌসী আক্তার কল্পনা ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাকী বেগম।
এর আগে তিন কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় কারা অধিদপ্তরের সাময়িক বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) বজলুর রশীদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক (নিম্ন) আদালত। তারপরে আপিল আবেদন করেন হাইকোর্টে। ওই দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের যে আদেশ দিয়েছিলেন আদালত, সেটি স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আপিল আবেদনের বিষয়ে শুনানিতে গত ৩ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন। নথিও তলব করেছিল আদালত।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর জ্ঞাত আয়ের বাইরে ৩ কোটি টাকার বেশি সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কারা কর্তৃপক্ষ থেকে বরখাস্ত হওয়া পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বজলুর রশীদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। এছাড়া তাকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রের অনুকূলে তার তিন কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকা বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর মামলায় বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর বেলা ১১টা থেকে বজলুর রশীদ ও তার স্ত্রী রাজ্জাকুন নাহারকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দুদক। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুপুরে দুদক পরিচালক মো. ইউসুফের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেফতার করে।
২০২০ সালের ২৬ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাসির উদ্দীন বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই সালের ২২ অক্টোবর মামলায় বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, বজলুর রশীদ রূপায়ন হাউজিং এস্টেট থেকে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী রোডের ৫৫/১ (পুরাতন) ৫৬/৫৭ (নতুন) নির্মাণাধীন স্বপ্ন নিলয় প্রকল্পের ২৯৮১ বর্গফুট আয়তনের অ্যাপার্টমেন্ট কিনেন। অ্যাপার্টমেন্টের মূল্য বাবদ তিন কোটি ৮ লাখ টাকা পরিশোধও করেছেন। এ অ্যাপার্টমেন্ট কেনায় বজলুর রশীদ যে টাকা পরিশোধ করেছেন, এর সপক্ষে কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি।
এমনকি তিনি অ্যাপার্টমেন্টের ক্রয় সংক্রান্ত কোনো তথ্য তার আয়কর নথিতে দেখাননি। পরিশোধিত ৩ কোটি ৮ লাখ টাকা জ্ঞাত আয় উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। সব মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক আইন ২৭ (১) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
কারা ক্যাডারের ১৯৯৩ ব্যাচের কর্মকর্তা বজলুর রশীদ ঢাকায় কারা সদর দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেন।
এফএইচ/এমআইএইচএস/এএসএম