আফতাবনগরে পশুর হাট বসাতে বাধা নেই

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:১৫ পিএম, ১৪ জুন ২০২৩
ফাইল ছবি

আসন্ন ঈদুল আজহা ঘিরে রাজধানীর আফতাবনগরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আবেদনে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন। এর ফলে আফতাব নগরে পশুর হাট বসাতে কোনো বাধাঁ নেই।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১৪ জুন) সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন তিন সদেস্যর আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ আপিল আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ।

তবে রিটের পক্ষে আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ বলেছেন, আদালত হাইকোর্টের আদাদেশ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে। তবে আদালত বলেছেন, কে, এল ও এম ব্লকে পশুর হাট বসানো যাবে। অন্য ব্লকে স্থগিতাদেশ থাকবে। অর্থাৎ অন্য ব্লকে পশুর হাট বসানো যাবে না।

এর আগে আগত ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে রাজধানীর আফতাবনগরে গরুর হাট না বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য আগামী ১২ জুন ঠিক করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। গত ৩১ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীমের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন। রিটকারী আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানিতে উঠে।

আরও পড়ুন: আফতাবনগরে গরুর হাট বসানোর ইজারা স্থগিত

এর আগে ঈদুল আজহার সময় রাজধানীর আফতাবনগরে কোরবানির পশুর (গরুর হাট) না বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া আদেশের মেয়াদ আরও বাড়িয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে রোববার (২৮ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মাদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ওইদিন আদালতে রিটকারী আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ নিজেই শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সেলিম আযাদ। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান (জামান), সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সামীউল আলম সরকার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জুলফিয়া আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আশিক রুবায়েত।

রিটকারী আইনজীবী জানান, এর আগে গত ২২ মে গরুর হাট বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করেন আদালত। আজ সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়। বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আদেশের মেয়াদ আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে।

আগত ঈদুল আজহা কেন্দ্র করে রাজধানীর আফতাবনগরে গরুর হাট না বসানোর বিষয়ে ইজারার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃক বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগর ব্লক বি থেকে এইচ পর্যন্ত খালি জায়গা ইজারা দেওয়া কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। সাতদিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২২ মে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

পরিবেশ সংরক্ষণের দাবিতে গত ১৫ মে আফতাবনগরে গরুর হাট না বসানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ। জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন তিনি।

রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি কর্মকর্তা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়।

আরও পড়ুন: আফতাবনগরে গরুর হাট না বসাতে রিট

গত ২ মে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) পক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহে আলমের সই করা সম্পত্তি বিভাগ ইজারা/বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র ঘোষণা করেন। দরপত্রে ঈদুল আজহার দিনসহ পাঁচ দিন গরুর হাটের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে প্রথম পর্যায়ে দরপত্র বিক্রি ১৫ মে, আর ১৬ মে সাড়ে ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত।

এভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে দরপত্র বিক্রির পর ১৯ জুন পর্যন্ত দরপত্রের বাক্স ও খাম খোলার পর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সর্বোচ্চ দরদাতাকে সিডিউল দেওয়া হবে।

রাজধানীর বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগর ব্লক বি থেকে এইচ পর্যন্ত খালি জায়গা, যা বাড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের অংশ। আফতাব নগরসহ উত্তর সিটি করপোরেশন সাত স্থানে বাজারের কোরবানির গরু বিক্রির জন্য বাজারের ইজারা আহ্বান করেছেন।

রিটের আগে সিটি করপোরেশনের মেয়রের কাছে বাসিন্দাদের পক্ষে শেখ মাহমুদ উজ্জ্বল আবেদন করেন। বলা হয়, জহিরুল ইসলাম সিটিতে (আফতাব নগর) বসবাসরত লোকজন ঈদুল আজহার আগে ও পরে প্রায় এক মাস অস্থায়ী হাট বসানোর কারণে ব্যাপকভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেন। যেহেতু চলাচলের প্রধান সড়কের ওপর অস্থায়ী গরু-ছাগলের হাট বসে বলে (আফতাব নগর) এখানে বসবাসরত নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এসময় কোনো লোক অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। কেউ মারা গেলেও তার মরদেহ বহন করা দুরূহ হয়ে পড়ে।

এছাড়া গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে আবাসিক এলাকাটির বসবাসের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। গরু-ছাগলের নানাবিধ বর্জ্যে এলাকাটির পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হয়।

এছাড়া প্রধান সড়কটিও জহিরুল ইসলাম সিটি (আফতাব নগর) ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সারা বছরেই প্রধান সড়কটিতে খানাখন্দ থাকায় জহিরুল ইসলাম সিটির (আফতাব নগর) বসবাসরত সব নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক অসুবিধা পোহাতে হয়।

এফএইচ/এমকেআর/এএসএম/এমআইএইচএস

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।