মাদকের মাধ্যমে বছরে পাচার ৫ হাজার কোটি টাকা, তদন্ত চেয়ে রিট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:১৬ পিএম, ১৩ জুন ২০২৩
ফাইল ছবি

মাদকের কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। এই অর্থপাচারের বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। এছাড়া রিটে দেশের শীর্ষ মাদক কারবারিদের (ব্যবসায়ী) নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট সুবীরনন্দী দাস এই সম্পূরক রিট আবেদন করেন। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী নিজে।

দুই মাসের মধ্যে দেশের শীর্ষ ড্রাগ ডিলারদের নাম ও ঠিকানা দাখিল করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। ‘মাদক ব্যবসার কারণে বছরে পাচার ৫ হাজার কোটি টাকা’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ সম্পূরক আবেদনটি করা হয় বলে জানান আইনজীবী সুবীরনন্দী দাস।

আবেদনে মাদক ব্যবসার মাধ্যমে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

পাশাপাশি ‘মাদক ব্যবসার কারণে বছরে পাচার ৫ হাজার কোটি টাকা’ শীর্ষক অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশন, বিএফআইইউ, সিআইডি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

রিটে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে। গত ১১ জুন প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদকের কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। এছাড়া মাদক কেনাবেচা করে অর্থপাচারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে পঞ্চম। এশিয়ার দেশগুলো বিবেচনায় নিলে মাদকের মাধ্যমে টাকা পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ রয়েছে শীর্ষে।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাড অবৈধ অর্থ প্রবাহ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আঙ্কটাড) বলছে, এ হিসাব অনুমানভিত্তিক। মাদক ও অপরাধ প্রতিরোধে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনওডিসির সহায়তা এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ হিসাব করেছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন: মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বছরে ৭.৮ বিলিয়ন ডলার পাচার: সিআইডি প্রধান

প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৯টি দেশের মাদক সংশ্লিষ্ট অবৈধ অর্থ প্রবাহের অনুমানভিত্তিক হিসাব তুলে ধরেছে সংস্থাটি। অন্য দেশগুলো হলো- আফগানিস্তান, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, মালদ্বীপ, মেক্সিকো, মিয়ানমার, নেপাল ও পেরু।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাদকের অবৈধ অর্থ প্রবাহের দিক থেকে বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে মেক্সিকো।

এরপর কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, পেরু ও বাংলাদেশ। তালিকায় এশিয়ার যে পাঁচটি দেশের নাম রয়েছে, এরমধ্যে বাংলাদেশের পরেই আছে মালদ্বীপ ও নেপাল। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে আফগানিস্তান ও মিয়ানমার।

মূলত ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মাদকের মাধ্যমে অবৈধ অর্থপ্রবাহের এই চিত্র প্রথমবারের মতো তুলে ধরেছে আঙ্কটাড।

এফএইচ/এমএইচআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।