রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
রোগীর সেবায় মালি-পরিচ্ছন্নতাকর্মী: তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার কাজ রাঁধুনি, মালি, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে চলছে কি না তা খোঁজে বের করার জন্যে অনুসন্ধান/তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের রিট আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক গণমাধ্যমে দেওয়া তার সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, চিকিৎসার বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাই এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানের (জুডিশিয়াল ইনকয়ারির) নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজনীয় (প্রপার) চিকিৎসকসহ জনবল নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
রিটের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আসাদুজ্জামান আনসারি।
সঙ্গে সঙ্গে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবার কাজ রাঁধুনি, মালি, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে চিকিৎসায় সার্জারির কাজ করানোর মতো অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িতদের তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন>>> হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেবায় রাঁধুনি-মালি-পরিচ্ছন্নতাকর্মী!
রিটে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), কুড়িগ্রামের সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন ও কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বরত চিকিৎসককে বিবাদী করা হয়েছে।
অনলাইন পোর্টাল জাগো নিউজসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে মঙ্গলবার (১৬ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আনসারি।
এ সংক্রান্ত রিটের বিষয়ে বুধবার (১৭ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী।
জানা গেছে, রাঁধুনি, মালি, ওয়ার্ড বয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে চলছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্যসেবার কাজ। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় বছরের পর বছর এভাবেই চলছে চিকিৎসাসেবা। এতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ওয়ার্ড বয়, মালি, রাঁধুনি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা করছেন সার্জারি ও অপারেশনের কাজ। শুধু অপারেশন থিয়েটার নয়, হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগেও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন কর্মীরা।
রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে হাসপাতালটি ২৫ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। জনবল রয়েছে মেডিকেল অফিসার পদে আটজন, নার্সিং সুপারভাইজার একজন, সিনিয়র নার্স ২৬ জন, মিডওয়াইফ ছয়জন, ল্যাব টেকনিশিয়ান দুজন, প্রধান সহকারী একজন, অফিস সহায়ক তিনজন, ফার্মাসিস্ট দুজন, পরিসংখ্যানে একজন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক দুজন, অ্যাম্বুলেন্স চালক একজন, মালি একজন, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে পাঁচজন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী তিনজন।
আরও পড়ুন>>> ‘ওষুধ কোম্পানির উপহার নেওয়া বন্ধ করতে হবে’
স্বাস্থ্য সহকারী ৩০টি পদের বিপরীতে ১৭ জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে ছয়জনের বিপরীতে চারজন, ওয়ার্ড বয় তিনটি পদের মধ্যে একজন রয়েছেন।
তবে ডেন্টাল চিকিৎসক, এমটি ডেন্টাল, ইপিআই, রেডিও গ্রাফার, কার্ডিওগ্রাফার, ক্যাশিয়ার, স্টোরকিপার, জুনিয়র মেকানিকেল পদগুলো শূন্য রয়েছে।
এফএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম