বাফুফের সালাউদ্দিন-মুর্শেদী-সোহাগের দুর্নীতি অনুসন্ধানের নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০১ পিএম, ১৫ মে ২০২৩
কাজী সালাউদ্দিন, আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগ

 

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এরমধ্যে ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ফিফা) পক্ষ থেকে আসা অর্থ এবং সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অর্থ (টাকা) বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) তসরুফ করেছে কি না অনুসন্ধানে তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এর সঙ্গে রুলও জারি করেছেন আদালত।

রুলে বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে আগামী চার মাসের মধ্যে তদন্ত করে দুদককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৫ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আরও পড়ুন> বাফুফের সালাউদ্দিন-মুর্শেদী-সোহাগের ‘দুর্নীতি’র তদন্ত চেয়ে রিট

আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট লিটন আহমেদ, অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার খুররম শাহ মুরাদ ও অ্যাডভোকেট পিয়া জান্নাতুল। আর দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। বাফুফে কর্মকর্তাদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহজাম্মদ সাইফুল্লাহ মামুন ও ব্যারিস্টার মারগুব কবির।

ব্যারিস্টা সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন সাংবাদিকদের বলেন, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুল জারি করেছেন আদালত। রুলে বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এর আগে বাফুফের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান চেয়ে ৩ মে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। এতে ফল না পেয়ে তিনি রোববার (১৪ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন।

সায়েদুল হক সুমন জানান, ‘ফিফা নিয়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা। কিন্তু এটা ফৌজদারি এক্টিভিটিস। এজন্য অনুসন্ধান চেয়ে রিট করেছি।’

আবেদনে বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা/নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। পাশাপাশি বাফুফের কর্তাদের দুর্নীতি, অর্থ পাচার, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ)প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফের) সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

রোববার (১৪ মে) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন তার সুমন ফুটবল একাডেমির পক্ষে এ রিট দায়ের করেন। তিনি বলেন, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগসহ সংস্থাটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়ন হচ্ছে না। ফুটবলকে বাঁচাতে হলে তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এ কারণে রিট দায়ের করেছি।’

গত ১৪ মে আর্থিক অনিয়ম ও কাগজ জালিয়াতির দায়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগকে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা দুই বছরের জন্য সব ধরনের কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ করে। এ ছাড়া বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাকে।

আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, ফিফার দেওয়া অর্থ বাফুফের খরচ দেখাতে তিনি ভুল ডকুমেন্ট দেখিয়েছেন। ফিফা শুনানি ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেই এ শাস্তি দিয়েছে বলে তাদের বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

সোহাগের বিরুদ্ধে সাধারণ আর্টিকেল ১৫ (দায়িত্বে অবহেলা), ১৫ (সততা) ও ২৪ (মিথ্যা তথ্য দেওয়া) ভঙ্গের অভিযোগ দেখিয়েছেন তারা। এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে আবু নাঈম সোহাগকেও। অনুলিপি পাঠানো হয়েছে বাফুফে ও এএফসিতে। এরপর ১৭ এপ্রিল ইমরান হোসেন তুষারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে সোহাগকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে বাফুফে।

এফএইচ/এসএনআর/জেআইএম

 

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।