অধস্তন আদালতে বিচারক-আইনজীবীদের পরতে হবে না কোট-গাউন
দেশে চলমান তীব্র তাপদাহের কারণে অধস্তন আদালতের বিচারক ও আইনজীবীদের পোশাকের ক্ষেত্রে শিথিলতা আনা হয়েছে। এখন কালো কোট এবং গাউন পরিধান করার আবশ্যকতা নেই। এক্ষেত্রে শুধু পুরুষদের জন্য সাদা ফুল শার্ট ও নারীরা সাদা শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ, সাদা নেক ব্যান্ড ও কালো টাই পরতে পারবেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর বৈঠক শেষে শনিবার (১৩ মে) এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এ তথ্য।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবরের বিজ্ঞপ্তি নম্বর ৪০/২০২১ এর কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০২১ সালের ৩০ মার্চের বিজ্ঞপ্তি নম্বর ৭ জে পুনর্বহাল করা হলো।
আরও পড়ুন: আইনজীবীদের ড্রেসকোড পেশায় প্রভাব ফেলছে: ব্যারিস্টার সুমন
প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানীর সই করা এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের আলোচনাক্রমে এ সিদ্ধান্ত হয় যে, অধস্তন দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালত, ট্রাইব্যুনালসমূহের বিচারকরা এবং আইনজীবীরা ক্ষেত্রমত সাদা ফুলশার্ট বা সাদা শাড়ি/সালোয়ার কামিজ ও সাদা নেক ব্যান্ড / কালো টাই পরিধান করবেন। এ ক্ষেত্রে কালো কোট এবং গাউন পরিধান করার আবশ্যকতা নেই। এ নির্দেশনা আগামী রোববার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এর আগে বিভিন্ন সময় আদালতে আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবী। সে আবেদনে বলা হয় অতিরিক্ত গরমে নিয়ম অনুযায়ী কালো কোট, গাউন, কলার, ব্যান্ড/ টাই পরিধানের কারণে প্রতি বছর বহু সংখ্যক আইনজীবী হিট স্ট্রোক করেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়া তীব্র গরম এবং তাপপ্রবাহের কারণে কোট-গাউন পরে অনেক বয়স্ক আইনজীবী আদালতে যেতে পারেন না।
আরও পড়ুন>>>আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীর মৃত্যু, সহকর্মীদের দাবি হিটস্ট্রোক
অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার আইনজীবীদের নির্ধারিত পোশাক পরে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে একটি মামলার শুনানি শেষে নিজ চেম্বারে যাওয়ার সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন শফিউল আলম নামের এক আইনজীবী। পরে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সহকর্মীদের অনেকের দাবি ‘হিট স্ট্রোকে’ আইনজীবী শফিউল আলমের মৃত্যু হয়। তবে উচ্চ আদালতের আইনজীবী ও বিচারকদের ড্রেসকোড অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে, গত ১৮ এপ্রিল উচ্চ তাপমাত্রার প্রেক্ষাপটে আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করা হয়। এদিকে বৃহস্পতিবার (১১ মে) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের নেতৃত্বে কাযনির্বাহী কমিটির সদস্যরা দেখা করেন। এসময় বারের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আব্দুন নুর দুলালসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচ/জেডএইচ/এমএস/এমআইএইচএস