গরুর মাংস টিসিবির মাধ্যমে আমদানি চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১১ পিএম, ০৭ মে ২০২৩
ফাইল ছবি

গরুর মাংস সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে আমদানির দাবিতে সরকারের কাছে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশ পাওয়ার পর আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।

রোববার (৭ মে) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং টিসিবির চেয়ারম্যান বরাবরে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন।

বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী নিজেই।

নোটিশে বলা হয়েছে, গরুর মাংস বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য। কিন্তু বাজারে গরুর মাংসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে। গরুর মাংস ইতোমধ্যে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।

গরুর মাংসের পুষ্টিগুণ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, গরুর মাংস খুবই পুষ্টিকর ও খনিজ সমৃদ্ধ খাদ্য। এ প্রসঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটির (চ্যাটজিপিটি প্লাস, মডেল-৪) প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, গরুর মাংস অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাদ্য। এটি প্রোটিন সমৃদ্ধ উৎস হিসেবে পরিচিত, যা পাতলা পেশি গঠন এবং রক্ষা করে।

প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড গরুর মাংসের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়, যা শারীরিক কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গরুর মাংসে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স (বি১২, বি৬, এবং নায়াসিন) যা স্নায়ু ব্যবস্থা ও শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। এটি লৌহার একটি ভালো উৎস, যা অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে এবং অক্সিজেন বাহনে সাহায্য করে। এছাড়া গরুর মাংসে জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম যেমন খনিজ রয়েছে, যা ইমিউন ব্যবস্থা, অস্থির স্বাস্থ্য এবং ডিএনএ সিন্থেসিসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

লিগ্যাল নোটিশে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য গরুর মাংসের জোগান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার মাধ্যমে সরকার জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা সুরক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে, যা বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ এর লঙ্ঘন।

অপরদিকে গরুর মাংসের জোগান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার মাধ্যমে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, যার দরুন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যথাযথ পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকার ৩১/৩২ এর সরাসরি লঙ্ঘন।

আমদানি নীতি ২০২১-২৪, অনুযায়ী গরুর মাংস একটি আমদানিযোগ্য পণ্য। ‘দ্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ অর্ডার’ ১৯৭২ এর ধারা ১২ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির মাধ্যমে বাজারে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজারমূল্য সহনীয় রাখা টিসিবির আইনি কর্তব্য। কিন্তু টিসিবি বিদেশ থেকে গরুর মাংস আমদানি না করে তার আইনি কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে।

অপরদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ব্যর্থতার জন্য বাজারে গরুর মাংস নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ফলে বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ ও মৌলিক অধিকার ৩১/৩২ লঙ্ঘন হচ্ছে।

নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে অবিলম্বে গরুর মাংসের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনার জন্য এবং টিসিবির মাধ্যমে গরুর মাংস আমদানি করে বাজারে প্রয়োজনীয় সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হিসেবে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়।

এফএইচ/জেএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।