দুই মন্ত্রীকে আদালতে তলব


প্রকাশিত: ০৩:১৬ এএম, ০৮ মার্চ ২০১৬

প্রধান বিচারপতি ও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ায় খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে তলব করে নোটিশ জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামী ১৪ মার্চ (সোমবার) দুই মন্ত্রীকে তাদের বক্তব্যের লিখিত ব্যাখ্যা সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দিতে হবে এবং পরের দিন ১৫ মার্চ (মঙ্গলবার) সশরীরে সর্বোচ্চ আদালতে হাজির হয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে ৯ সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ছিলেন- বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, বিচারপতি মো. ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।

এ সময় আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুসহ প্রায় আড়াই শতাধিক আইনজীবী ও শতাধিক মিডিয়াকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আদালত বলেন, বিচার বিভাগ, সুপ্রিম কোর্ট, বিচারাধীন মামলা এবং প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে দুই মন্ত্রীর নগ্ন হস্তক্ষেপে বিচার বিভাগ স্তম্ভিত ও হতবাক। প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ নিয়ে মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হকের বক্তব্যে আদালতের সম্মানের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। আদালতের কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে আপিল বিভাগ বসেন এবং দুই মন্ত্রীর বিষয়ে এক আদেশে আপিল বিভাগ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে ১৫ মার্চ সকাল ৯টায় সশরীরে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। পরে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

আদালত আদেশের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি গণমাধ্যমে সর্বোচ্চ আদালত সম্পর্কে প্রচারিত অশোভন কিছু মন্তব্যে বিচার বিভাগ স্তম্ভিত ও হতবাক। এটি স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে আদালত মনে করে।

তাদের বিরুদ্ধে আদলত রুল জারি করেন এবং রুলে দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চাওয়ার হয়েছে।

উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মীর কাসেম আলীর আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের সমালোচনা করে গত শনিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে বক্তব্য দেন সরকারের দুই মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আকম মোজাম্মেল হক। প্রধান বিচারপতি তাঁর আসনে থাকতে চাইলে অনাকাঙ্খিত বক্তব্য বন্ধ করা উচিত বলেও পরামর্শ দেন তারা।

একইসঙ্গে মীর কাসেম আলীর মামলায় আপিল বিভাগের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি যেসব মন্তব্য করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে (প্রধান বিচারপতি) বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে ওই মামলায় পুনরায় শুনানি করার আহ্বান জানান দুই মন্ত্রী।

সরকারের দুই মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে কথার উত্তাপ। আইনজীবীসহ দেশের বিশিষ্টজনেরা বলেছেন চূড়ান্ত রায়ের আগে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য দেয়া ঠিক হয়নি। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও বলেন, তাদের বক্তব্য অসাংবিধানিক।

এফএইচ/আরএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।