গরমে ড্রেসকোড পরিবর্তন চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন
আইনজীবীদের জন্য প্রচলিত গ্রীষ্ম (গরমে) এবং শীতকালীন ড্রেসকোডের পরিবর্তন চেয়ে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে আর্জি জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মো. কাউছার এবং অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন এ আবেদন জানান। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।
আবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মূলত একটি গ্রীষ্মপ্রধান দেশ। বছরের প্রায় ৮ মাস উচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করে এখানে। বাংলাদেশে আইনজীবীদের আদালতে পরিধানের জন্য সিভিল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, ক্রিমিনাল রুলস অ্যান্ড অর্ডারস, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রুলস ১৯৭৩ এবং আপিল বিভাগের রুলস ১৯৮৮ তে শীত এবং গ্রীষ্মকালে একই ধরনের পোশাক পরিধানের কথা বলা হয়েছে।
‘বর্তমানে প্রচলিত আইনজীবীদের পোশাক মূলত ব্রিটিশ ভাবধারা এবং আবহাওয়া বিবেচনায় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কালের পরিক্রমায় আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশ একটি গ্রীষ্মপ্রধান দেশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। কিন্তু আইনজীবীদের কল্যাণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনের সুবিবেচনায় পোশাকের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি।’
ফলে সারাদেশের হাজার হাজার আইনজীবী প্রতি বছরের মার্চ মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত উচ্চমাত্রার গরম আবহাওয়ার কারণে নিদারুণ, অসহনীয়, অবর্ণনীয়, শারীরিক এবং মানসিক কষ্ট সহ্য করেন। এভাবে তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করে লাখ লাখ বিচারপ্রার্থীকে আইনি সেবা দিয়ে আসছেন। তারা আদালতের বন্ধু হিসেবে বিচার কাজে সহযোগিতা করে আসছেন, বলা হয় আবেদনে।
এতে আরও বলা হয়, একই সঙ্গে দেশের অধস্তন (নিম্ন) এবং সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা একই ধরনের পোশাক পরিধান করায় অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করে যাচ্ছেন। অতিরিক্ত গরমে নিয়ম অনুযায়ী কালো কোট, গাউন, কলার, ব্যান্ড/টাই পরিধানের কারণে প্রতিবছর বহু সংখ্যক আইনজীবী হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন এবং অনেক আইনজীবী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
‘ফলে আইনজীবীদের স্বাস্থ্যের হানি ঘটছে এবং তারা সংবিধান প্রদত্ত জীবনের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একইভাবে বিচারপ্রার্থীদের সঠিকভাবে আইনি সহায়তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন এবং আদালতকে সঠিকভাবে বিচারিক কার্য পালনে সহায়তা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ফলে দেশের সামগ্রিক বিচার ব্যবস্থাই মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
‘শুধু একটি নির্দিষ্ট পোশাকের কারণে উদ্ভূত এই সমস্যা থেকে এখনই পরিত্রাণ পাওয়া অত্যন্ত জরুরি এবং মানবিক তথা সময়ের প্রয়োজন। এর আগে করোনা মহামারি কালে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা মোতাবেক ড্রেস কোড পরিবর্তন করা হয়েছিল। এর ফলে আদালতের বিচারকার্য বা আইনজীবীদের পেশাগত কোনো অসুবিধা হয়নি তথা বিচারপ্রার্থীদেরও কোনো অসুবিধা হয়নি।’
তাই আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী, বিচারক এবং বিচার বিভাগের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে আইনজীবীদের প্রচলিত পোশাকের পরিবর্তন আবশ্যক। বিষয়টি সুবিবেচনায় নিয়ে আইনজীবী এবং বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেস কোড নির্ধারণের জন্য আবেদনে প্রধান বিচারপতির সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।
আবেদনের একটি কপি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এবং পদাধিকার বলে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিনের নিকট জমা দেওয়া হয়েছে।
এফএইচ/কেএসআর/এমএস