সব এয়ারলাইন্সে হজযাত্রী পরিবহন কেন নয়: হাইকোর্ট
সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে ‘অতিরিক্ত খরচ’ নির্ধারণ করা সংবলিত প্রজ্ঞাপন জনস্বার্থ পরিপন্থি বলে কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া প্রতিযোগিতামূলক বিমানভাড়ার ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী বহনে সব আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সকে সুযোগ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন উচ্চ আদালত।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক এবং হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে (হাব) এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটে এক সম্পূরক আবেদনের ভিত্তিতে রোববার (২ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেছেন। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট আশরাফ-উজ-জামান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আরও পড়ুন>> হজ প্যাকেজ কেন জনস্বার্থ পরিপন্থি নয়: হাইকোর্ট
এদিকে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে নির্ধারণ করা হজের খরচ ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা থেকে কমানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। গত ১২ মার্চ এ রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ-উজ-জামান।
এর আগে এক সপ্তাহ সময় দিয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবরে আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন এ আইনজীবী। নোটিশে সাড়া না পেয়ে তিনি রিট করেন। গত ২২ মার্চ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় বর্তমান হজ প্যাকেজের মূল্য ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা থেকে ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমিয়ে ছয় লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের মূল্য ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা থেকে ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমিয়ে ছয় লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ১ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে হজ প্যাকেজ ২০২৩ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার লক্ষ্যে হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: কোন দেশ থেকে হজে যেতে খরচ কত?
ওইদিন এ বিষয়ে স্মারক জারি করে মন্ত্রণালয়। সেখানে বিমানভাড়া দেখানো হয়েছে এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা। নোটিশ প্রেরণকারী আইনজীবীর বক্তব্য হলো- বর্তমানে বাংলাদেশ-সৌদি-বাংলাদেশ রুটে বিমানভাড়া ৭৬ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি বছর দুই দেশের সরকার হজযাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট কিনতে বাধ্য করে। এ কারণে টিকিট কিনতে হজযাত্রীদের স্বাধীনতা খর্ব হয়।
এসব কারণসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে নোটিশে চার লাখ টাকার মধ্যে হজ প্যাকেজ-২০২৩ সংশোধন, পরিবর্তন এবং পুনর্নির্ধারণ করতে বলা হয়। সাতদিনের মধ্যে করতে ব্যর্থ হলো প্রয়োজনীয় পদক্ষপ নেবেন। তারই ধারাবাহিকতায় রিটটি করা হয়।
আরও পড়ুন: হজ প্যাকেজ ঘোষণা, এবার জনপ্রতি খরচ ৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা
চলতি মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে সৌদি আরব যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন হজ পালনের অনুমতি পাবেন।
এফএইচ/এএএইচ/জেআইএম