জেল সুপারের বিরুদ্ধে ই-অরেঞ্জ পরিচালকের রিট

মানি লন্ডারিং মামলায় ই-অরেঞ্জের প্রধান পরিচালক আমান উল্লাহ চৌধুরীকে কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে রাখা ও ঘুস দাবির অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট জেল সুপারের বিষয়ে অনুসন্ধান ও ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।

হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আসামি আমান উল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী নুসরাত জাহান এ রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনের বিষয়ে শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আবেদন করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে রোববার (২ এপ্রিল) শুনানি হতে পারে। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ পিটিশনার আইনজীবীকে দুদকে দরখাস্ত দিয়ে আসতে বলেছেন।

আদালতে এদিন রিট পিটিশনার পক্ষ শুনানি করেন আইনজীবী আবুল মতিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে আইনজীবী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। কারাগারে যাওয়া অন্য আসামি হলেন- প্রতিষ্ঠানটির চিফ অপারেটিং অফিসার আমান উল্লাহ চৌধুরী।

আরও পড়ুন>> ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়াসহ তিনজন কারাগারে

ওইদিন পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ২৩ আগস্ট মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সোনিয়া দম্পতিসহ তিনজনের ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া প্রত্যেকের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

একই বছরের ৬ আগস্ট ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন তাহেরুল ইসলাম নামে এক ভুক্তভোগী। মামলায় তিনি ই-অরেঞ্জের পাঁচ কর্মকর্তাসহ সব মালিককে আসামি করেন।

আরও পড়ুন>> মাশরাফির বাসার পথে ই-অরেঞ্জের গ্রাহকরা

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনার জন্য টাকা দেওয়া হয়, যা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের পর ই-অরেঞ্জ কোম্পানির ডেলিভারি দেওয়ার কথা ছিল। এ শর্তেও বারবার নোটিশের নামে ভুক্তভোগীদের পণ্য ডেলিভারি না করে প্রতারণা করে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা ই-অরেঞ্জের অফিসে গিয়ে ডেলিভারি দেওয়ার কথা বললে অফিসে কর্মরত কর্মকর্তারা ও মালিকপক্ষ জানান, কিছুদিনের মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো পণ্য ডেলিভারি না করে এক লাখ ভুক্তভোগীর প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করেছে।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, করোনাকালে ভুক্তভোগীদের কষ্টার্জিত অর্থের নিশ্চয়তা না দিয়ে ই-অরেঞ্জ তাদের মালিকানা পরিবর্তনের নামে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছে। নতুন মালিক ও পুরোনো মালিকের কোনো তথ্য ভুক্তভোগীদের সামনে প্রকাশ করা হচ্ছে না। এছাড়া আসামিরা সব ধরনের অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।

ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে অর্ডার নিয়ে পণ্য ডেলিভারি না দেওয়ার অভিযোগে গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর গুলশানে বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীরা। সেই টাকা ও পণ্যের দাবিতে মাশরাফি বিন মর্তুজার বাসার সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।

এফএইচ/এএএইচ/জেআইএম