ঢাকা ও রংপুরের দুই বিচারকের ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট


প্রকাশিত: ০২:১০ পিএম, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রাজধানীর একটি হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র দেয়ার এক বছর পেরিয়ে গেলেও মামলাটি বিচারের জন্য কেন দায়রা আদালতে পাঠানো হয়নি সে বিষয়ে ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিমের কাছে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

সেই সঙ্গে রংপুরে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় এক আসামির জামিন আবেদনের প্রেক্ষিতে তা শিশু মামলা হিসেবে কেন গ্রহণ করা হয়েছে সে বিষয়ে এক বিচারকের কাছেও ব্যাখ্যা চেয়েছেন আদালত।

পৃথক দুই আসামির জামিন আবেদন খারিজ করে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ১০দিনের মধ্যে উভয় বিচারককে তাদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
 
আদালত তার নির্দেশে বলেন, নারী ও শিশু নি্র্যাতন দমন আইনে করা মামলা কোন ক্ষমতাবলে শিশু মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছেন তা দশ দিনের মধ্যে  বিচারককে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে হবে।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একে এম মনিরুজ্জামান কবির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম খান। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আইনজীবী গোপাল চন্দ্র।

ঢাকার ঘটনা : ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর রাজধানীর কমলাপুর রেল স্টেশনের টিকেট কাউন্টারের সংরক্ষিত ক্যাশ রুমে  খুন হন বুকিং সহকারী ইস্রাফিল হোসেন। এ ঘটনায় ওইদিনই স্টেশন মাস্টার সাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় গ্রেফতারের পর আসামি তালেবসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর অভিযোগ (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে তালেব জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করলে ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর তা খারিজ হয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে তালেব হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান বলেন, অভিযোগপত্র দাখিলের পর মামলাটি বিচারের জন্য দায়রা আদালতে যাবে। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও মামলাটি দায়রা আদালতে পাঠানো হয়নি। এ বিষয়ে ১০দিনের মধ্যে ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিমকে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট।

রংপুরের ঘটনা : ২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর রংপুরের পীরগাছায় ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরী ৫২ বছরের পূর্ণ বয়সী এক প্রতিবেশী দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়। এই ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পীরগাছা থানায় ঘটনার দিনই মামলা করেন ভিকটিম নিজেই। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলছে।

২০১৫ সালের ১২ অক্টোবর গ্রেফতার হন দেলোয়ার নামের এক আসামি। এরপর তিনি জামিন আবেদন করলে এ বছরের ১৩ জানুয়ারি রংপুরের অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ (প্রথম আদালত) মো. রোকনুজ্জামান জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন। এরপর দেলোয়ার হাইকোর্টের জামিন আবেদন করেন।

এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান কবির বলেন, এজহার অনুসারে আসামির বয়স ৫২ ও কিশোরীর বয়স ১৫ বছর। আসামির বয়স ৫২ বছর হওয়া স্বত্ত্বেও জামিন আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলাটি শিশু মামলা হিসেবে (শিশু মিছ কেস-১৬৮/২০১৫) গ্রহণ করেন বিচারক।

তিনি বলেন, নারী ও শিশু নি্র্যাতন দমন আইনে করা মামলাটি কোন কতৃত্ববলে শিশু মামলা হিসেবে গ্রহণ করলেন সে বিষয়ে ১০দিনের মধ্যে ওই বিচারককে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
 
এফএইচ/এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।