জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের জামিন মেলেনি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. মো. শফিকুর রহমানের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) তার আইনজীবী জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে জামিনের বিরোধিতা করেন রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদের তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর দিনগত রাত ১টায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তাকে আটক করে।
আরও পড়ুন: জামায়াত আমির শফিকের ছেলে ডা. রাফাত গ্রেফতার
পরে ১৩ ডিসেম্বর ডা. শফিকুর রহমানকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর যাত্রাবাড়ী থানার সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে, তার আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ২১ ডিসেম্বর সাতদিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু-তদন্তের জন্য তাকে ফের আটদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের পরিদর্শক আবুল বাশার।
অপরদিকে, তার আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুর তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর তার আইনজীবী তার জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন শুনানির জন্য আজ (১৭ জানুয়ারি) দিন ধার্য করেন।
আরও পড়ুন: ছেলের জঙ্গিবাদে জড়ানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন জামায়াত আমির
গত বছরের ৯ নভেম্বর শফিকুর রহমানের ছেলে রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। তার ছেলের (সাদিক সাইফুল্লাহ) বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
জামায়াতের আমিরের ছেলে গ্রেফতার ডা. রাফাত চৌধুরী নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন। তাকে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। একই মামলায় শফিকুরকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
২০২১ সালে আরাকানে রোহিঙ্গাদের পক্ষে জিহাদের উদ্দেশে রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন ‘আরসা’ ও ‘আরএসও’ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ডা. রাফাত। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত ‘আরএসও’ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।
আরও পড়ুন: নতুন জঙ্গি সংগঠনে জামায়াত আমিরের সমর্থন ও অর্থায়ন রয়েছে
গত ১ নভেম্বর রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- সেজাদুল ইসলাম সাহাব তানিম ওরফে ইসা ওরফে আরাফাত ওরফে আনোয়ার ওরফে আনবির (২৪), মো. জাহিদ হাসান ভূঁইয়া (২১) ও সৈয়দ রিয়াজ আহমদ (২২)।
তাদের তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা সবাই উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. রাফাত চৌধুরীর মাধ্যমে দাওয়াতপ্রাপ্ত হন। গত ৬ নভেম্বর তারা ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে গ্রেফতার তিনজন ডা. রাফাতসহ অন্য সহযোগীদের নাম প্রকাশ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট এলাকা থেকে ডা. রাফাত চৌধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জেএ/কেএসআর/এমএস