সালাম মুর্শেদীর বাড়ি দখলের অভিযোগ

দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: হাইকোর্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:০৫ পিএম, ২৭ নভেম্বর ২০২২
ফাইল ছবি

সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি নিয়ে কোনো দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে বাড়ি সংক্রান্ত সব নথিপত্র আগামী বৃহস্পতিবারের (১ ডিসেম্বর) মধ্যে দাখিল করতে রাজউক ও গণপূর্তকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এর আগে সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সম্পর্কিত নথি হাইকোর্টে দাখিল করেন সালাম মুর্শেদী।

সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি নিয়ে শুনানিতে রোববার (২৭ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি ও খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশানের একটি বাড়ি দখলে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্যে ১ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেছেন আদালত।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে মো. খুরশীদ আলম খান ও রাজউকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন মাসুদ। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক।

গত ১ নভেম্বর সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশানের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি দখলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই বাড়ির সব নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। ১০ দিনের মধ্যে হলফনামা আকারে নথি দাখিল করতে বলা হয়েছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান এবং আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে।

একই সঙ্গে সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির ‘খ’ তালিকাভুক্ত বাড়িটি বেআইনিভাবে দখল করার অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, দুদক চেয়ারম্যান, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে ১০ দিনের মধ্যে। আদালত এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ঠিক করেছিলেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক, তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলী। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আব্দুস সালাম মুর্শেদীর বাড়ির প্রয়োজনীয় নথি দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১০ দিনের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে হলফনামা আকারে নথি দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এর আগে ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়েছিল। রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

এতে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭-এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।

রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও চলতি বছরের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়েছে।

২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন, রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সেই চিঠি আমলে না নেওয়ায় ফের ৪ জুলাই চিঠি দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেওয়া হলো, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।

এফএইচ/এএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।