জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
পুলিশের চোখে স্প্রে মেরে দুই আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রোববার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন।
এর আগে এদিন দুপুরে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণ থেকে প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান জঙ্গিরা।
ছিনিয়ে নেওয়া দুই আসামি হলেন মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল। শামীমের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকের মাধবপুর গ্রামে। সোহেলের বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারীর ভেটোশ্বর গ্রামে। তাদের ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় তাদের হাজিরা করা হয়েছিল। হাজিরা শেষে হাজতখানায় নেওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান হারুন আর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুটি মোটরসাইকেলে চারজন লোক এসে পুলিশের চোখে স্প্রে করে আসামিদের ছিনিয়ে নিয়ে যান। তারা প্রকাশক দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিলো জঙ্গিরা
রোববার রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় কারাগারে থাকা ১২ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা দুই আসামি আদালতে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তবে পলাতক ছয় আসামি উপস্থিত ছিলেন না।
শুনানি শেষে তাদের আদালত থেকে বের করা হয়। এরপর সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নেওয়ার পথে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গেটের সামনে পৌঁছালে দুটি মোটরসাইকেলে চার জঙ্গি পুলিশের চোখে স্প্রে করে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এসময় তারা একটি মোটরসাইকেল ফেলে রেখে যান। এরপর পুলিশ কনস্টেবল আজাদকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এদিকে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারে রাজধানীতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি থানা ও অন্যান্য ইউনিটকে চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সারাদেশের আদালতগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
আরও পড়ুন: দুই জঙ্গি ছিনতাই: রাজধানীতে রেড অ্যালার্ট
গত বছর ১০ ফেব্রুয়ারি জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়াসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বহিষ্কৃত মেজর জিয়া, আকরাম হোসেন, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুস সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে সাদ, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার এবং শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের। আসামিদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক।
আরও পড়ুন: দুই জঙ্গি লাপাত্তা: সারাদেশের আদালতে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওইদিন তার স্ত্রী শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জেএ/ইএ/জিকেএস