মাথা বিচ্ছিন্ন করে মরদেহে আগুন: এক আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল
সিলেটে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সোহেল আহমদ (২৪) নামে এক ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক আসামির দণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণার করেছেন হাইকোর্ট। তবে অপর আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সুজা আল ফারুক ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এস এম শফিকুল ইসলাম।
রায়ে সিলেটের মোগলগাঁও ইউনিয়নের বানাগাঁওরের কাজল মিয়ার মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ইসলাম উদ্দিন ওরফে ইসলামকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, ইসলাম উদ্দিনের এক বোনকে বিয়ে করেছিলেন সিলেট নগরের গোটাটিকর এলাকার বাসিন্দা লন্ড্রি ব্যবসায়ী সোহেল আহমদ। ইসলাম এ বিয়ে মেনে নেননি। এ ক্ষোভ থেকে ইসলাম তার বন্ধু কাজলকে নিয়ে ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল রাতের বেলা সোহেলকে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বানাগাঁও এলাকার দালুয়ারবন্দ হাওরে নিয়ে যান। সেখানে ইসলাম ও কাজল মিলে সোহেলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করেন। মাথাটি অন্য একটি জায়গায় ফেলে দিয়ে মরদেহ পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। পরদিন পুলিশ সোহেলের মাথাটি হাওর এলাকা থেকে উদ্ধার করে।
ঘটনার দিন সোহেল তার বাবা জয়নাল আহমদকে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পেছনে শ্বশুরবাড়ির কেউ জড়িত থাকতে পারে-এ ধারণায় ইসলাম ও তার বন্ধু কাজলসহ ৯ জনকে আসামি করে জয়নাল আবেদীন ১৯ এপ্রিল সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ইসলাম উদ্দিন ও কাজলকে গ্রেফতার করলে এক পর্যায়ে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেন। ইসলাম তার বোনকে বন্ধু কাজলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এ চাওয়া পূরণ না হওয়ায় দুজন মিলে সোহেলকে হত্যা করেন।
কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক আবদুর রহিম মামলার তদন্ত করে ২০১১ সালের ২৬ জুন আদালতে ইসলাম ও কাজলসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার মোট ৪০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে সোহেলের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সোহেলের ছোট ভাই রুবেল আহমদ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা চাই দ্রুত এ রায় কার্যকর হোক।
এফএইচ/জেএস/জিকেএস