বদলির আদেশকে শাস্তি হিসেবে গণ্য করার সুযোগ নেই: আপিল বিভাগ
বদলির আদেশকে শাস্তি হিসেবে গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই বলে এক রায়ে উল্লেখ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ‘অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড বনাম মো. হানিফ শেখ এবং অন্যান্য’ শীর্ষক মামলার রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে লিভ টু পিটিশনে মেরিট রয়েছে উল্লেখ করে তা নিষ্পত্তি করে রায় দেন।
বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা হলেন— বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। সাত পৃষ্ঠায় দেওয়া এ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটৈ প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, ‘there is no scope to hold the said order of transfer is a punishment.’
প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে অগ্রণী ব্যাংকের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) নিষ্পত্তি করে এ রায় দেওয়া হয়। ৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। রায়টি লিখেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
আদালতে অগ্রণী ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. হেফজুল বারী। হানিফ শেখের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন।
মামলাটিতে বলা হয়, চাকরি দেওয়ার কথা বলে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তা (ক্যাশ) হানিফ শেখের তিনটি বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট প্রত্যাহারের পাশাপাশি অন্য জায়গায় বদলি করার সিদ্ধান্ত নেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এর বিরুদ্ধে তিনি ব্যাংকের বোর্ডের কাছে আপিল করেন। বোর্ড তিনটির পরিবর্তে একটি ইনক্রিমেন্ট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত দেয়। এর বিরুদ্ধে হানিফ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে তা নামঞ্জুর হয়। পরে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন হানিফ। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাতিল করে এবং হানিফের আপিল মঞ্জুর করে রায় দেন আপিল ট্রাইব্যুনাল। হানিফের বিরুদ্ধে অর্থ নেয়ার অভিযোগ যারা করেছিলেন, তারাও তা তুলে নেন। তবে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে অগ্রণী ব্যাংক আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা নিষ্পত্তি করে রায় দিলেন আপিল বিভাগ।
রায়ে বলা হয়, এটি সত্যি যে শাস্তির আদেশে বিবাদীর (হানিফ) একটি ইনক্রিমেন্ট প্রত্যাহারের পাশাপাশি বদলির কথা বলা হয়। কিন্তু বদলির আদেশকে শাস্তি হিসেবে গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই।
এটি একটি প্রশাসনিক আদেশ, যা চ্যালেঞ্জ করা যায় না এবং শাস্তি হিসেবে গণ্য করা যায় না। আপিল বিভাগের রায়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
এফএইচ/এমএএইচ/জিকেএস