খালেদার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হচ্ছে সোমবার
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় সোমবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হতে পারে।
মামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালায় অনুমতি দেয়ার পর রোববার সাংবাদিকদের এ কথা জানান সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। এসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের একটি অনুলিপি সাংবাদিকদের দেখান তিনি।
মেহেদী বলেন, নিয়ম অনুসারে আবেদন করেছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছেন। সোমবার বিচারিক আদালতে মামলা করবো।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্যে রাষ্ট্রদ্রোহের কিছু নেই বলে উল্লেখ করেছেন তার আইনজীবী ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
খন্দকার মাহবুব বলেন, খালেদা জিয়া গত ২১ ডিসেম্বর শহীদদের সঠিক তথ্য থাকার বিষয়ে যা বলেছেন তাতে কোন ভাবেই রাষ্ট্রদ্রোহ হয়নি।’
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার অনুমতি দিয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার রাজধানীর চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) মাদক বিষয়ক এক বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফলাফল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা ওই আবেদনে বলা হয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। এছাড়া জাতির পিতা ও আওয়ামী লীগ নিয়েও বিরূপ মন্তব্য করেছেন তিনি। এসব সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত এবং প্রতিষ্ঠিত বিষয়। এ বিষয়ে নতুন করে বিতর্কের অবতারণা করায় তার অপরাধ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল বলে মনে করা হচ্ছে। খালেদা সংবিধান লঙ্ঘন করে কথা বলেছেন এবং রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অপরাধ করেছেন। আইনি নোটিশ দেয়ার পরও তিনি ক্ষমা চাননি বা বক্তব্য প্রত্যাহার করেননি।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। আজকে বলা হয়, এত লাখ লোক শহীদ হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা জিয়া দাবি করেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।’
এরপর ২৩ ডিসেম্বর খালেদার বক্তব্যে ‘দেশদ্রোহী’ মনোভাব পাওয়া যাচ্ছে অভিযোগ করে তা প্রত্যাহার করতে উকিল নোটিশ পাঠান সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড.মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। নোটিশের জবাব না পাওয়ার ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা মোতাবেক তিনি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আবেদন করেন। গত ২১ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলার অনুমোদন দেন।
এফএইচ/এসকেডি/পিআর