ই-অরেঞ্জে অর্থপাচার হয়েছে কি না, তদন্তের নির্দেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:০৯ পিএম, ০৭ এপ্রিল ২০২২

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কাছে আটকে থাকা গ্রাহকের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে কি না সেটি খুঁজে দেখতে একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই কমিটিকে তদন্ত করে আগামী চার মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্সসহ সংশ্লিষ্টদের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে, প্রতারণার শিকার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ গ্রাহকদের অর্থ ফেরত কেন দেওয়া হবে না এই মর্মে জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের পক্ষে করা রিটের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম।

এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার সাবরিনা জেরিন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

এ বিষয়ে এম আব্দুল কাইয়ুম জাগো নিউজকে বলেন, ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গত বছরের মাঝামাঝি থেকে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে সময় মতো পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ ওঠে। প্রতিষ্ঠার মাত্র দুই বছরের মধ্যে গ্রাহক আকর্ষণে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ডিসকাউন্টের নামে তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয় ই-অরেঞ্জ। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, কোম্পানিটি বিপুল অর্থ এরই মধ্যে বিদেশে পাচারও করেছে।

তিনি জানান, গ্রাহকেরা অনেক চেষ্টা করেও পাওনা টাকা ফেরত না পেয়ে আইনের দ্বারস্থ হন। এ অবস্থায় ই-অরেঞ্জের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে তদন্তসহ গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ শতাধিক গ্রাহক এ রিট আবেদন করেন। রিটে ই-অরেঞ্জের অর্থের উৎস অনুসন্ধানসহ গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের পক্ষে ব্যারিস্টার এম. আব্দুল কাইয়ুম এ রিট আবেদন করেন।

রিটে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), বাংলাদেশ ব্যাংক, ই-অরেঞ্জের সোহেল রানা, সোনিয়া মেহজাবিন ও বীথি আক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

রিট আবেদনে গ্রাহকদের পক্ষে প্রতিনিধি ছিলেন- মোহাম্মদ আফজাল হোসাইন, আরাফাত আলী, তারেকুল আলম, শাকিবুল আলাম সোহাগ, রানা খান ও হাবিবুল্লাহ জাহিদ।

রিটে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি ই-ওয়ালেট, গিফট কার্ডসহ অন্যান্য অননুমোদিত পদ্ধতিতে লেনদেন করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গ্রাহকদের সর্বস্বান্ত করেছে। সরকারি দপ্তরগুলোর নাকের ডগায় থেকে প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছে কোম্পানিটি। কিন্তু এসবের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

অর্ডারের টাকা নিয়ে সময় মতো পণ্য সরবরাহ না করে গ্রাহকদের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মামলায় ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমান এখন কারাগারে।

এফএইচ/এমএইচআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।