বিচার বিভাগে আঘাত রক্ষা করবে কে : প্রধান বিচারপতি


প্রকাশিত: ০৪:৪৯ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০১৬

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা বলেছেন, বিচার বিভাগের প্রতি যদি আঘাত চলে আসে এ বিচার বিভাগকে রক্ষা করবে কে? তিনি বলেন, সরকারের নির্বাহী বিভাগ আমাদের কাছ থেকে (বিচার বিভাগ) সবগুলোই নিয়ে নিতে চাচ্ছে। রোববার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির উদ্দ্যোগে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, ‘এখন নির্বাহী বিভাগ (এক্সিকিউটিভ) আমাদের কাছ থেকে সবগুলো ক্ষমতা যদি চেষ্টা করে, সবগুলোই নিয়ে নিতে চাচ্ছে। অতীতে আমরা দেখেছি যখনি এ ধরনের কিছু হয়েছে আইনজীবীরা সোচ্ছার হয়েছেন। এখন যদি বিচার বিভাগের প্রতি যদি এক্সিকিউটিভ, আইনজীবীমহল, বিচার প্রার্থী প্রত্যেকের কাছ থেকে আঘাত চলে আসে এ বিভাগকে রক্ষা করবে কে?

তিনি আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলেন। আইনের শাসনের কথা বলেন। আপনাদের ছাড়া কি এগুলো সম্ভব?। শুধু আপনাদের স্বার্থের গুলোকে যদি সমর্থন করি তাহলে ঠিক আছে। না হলে কোর্ট বয়কট করছেন। এখন এক্সিকিউটিভ আমাদের কাছ থেকে সবগুলো ক্ষমতা নিয়ে নিতে চাচ্ছে। অতীতে আমরা দেখেছি যখনি এ ধরনের কিছু হয়েছে আইনজীবীরা সোচ্ছার হয়েছেন। এখন বিচার বিভাগের প্রতি, এক্সিকিউটিভ, আইনজীবীমহল, বিচার প্রার্থীদের প্রতিও আঘাত চলে আসে এ বিচার বিভাগকে  রক্ষা করবে কে?

সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, আমি এই  কারণে বিজ্ঞ আইনজীবীদের সিনিয়র মোস্ট ড. কামাল, ব্যারিস্টার আমীর, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার সাহেব, আমি আপনাদের কাছে আবেদন করছি। আপনারা সারা বাংলাদেশের আগে কিন্তু বার কাউন্সিলের....। এই বিল্ডিংয়ে এই ....যেটা সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শসহ বিচারক হয়েছে এখানে সিদ্ধান্ত হয়ে এখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়, সিদ্ধান্ত করা হয়। আজকে বার কাউন্সিল এতো বড় সংগঠন, আজকে কেন আপনারা সোচ্ছার হচ্ছেন না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা আপনারা বলেন। প্রধান বিচারপতি সব সময় বলি। কিন্তু বিচার বিভাগ স্বাধীনতার কথা আমি যদি শুধু মুখেই বলি। তাহলে কি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হবে?’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট কিছু করতে পারছে না বলে দোষারোপ করা হয়। সারা বাংলাদেশে সাড়ে তিনশ বিচারককে বসাতে পারছি না। তাদের বসার মতো কোর্ট রুম নেই। আমরা যদি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা যদি না পাই বিচারকদের আমি কি রকম হিসেব করবো। আমি মামলাগুলো কি রকম নিষ্পত্তি করবো। এই বারের আইনজীবীরা যদি এ কথাগুলো বলতেন আমি একমত হতাম।’

তিনি বলেন, দুইমাস আগে ভারতে গিয়েছিলাম।..... বিচারপতি ঠাকুর তখনো প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেননি। তার সাথে ডিনারে চারজন বিচারপতিরসঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন। যারা ২০২৫ সাল পর্যরন্ত ভারতের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হবেন। এটা শুনে আমি শুধু তার মুখের দিকে চেয়ে থাকলাম। আমরা কোথায়। তারা কোথয়। রুল অব ল বলতে কী জিনিস। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বলতে কী জিনিস। ওনারা যখন বিচার করবে আমরা তখন বিচার করবো এর মধ্যে পার্থক্য আমি বলতে চাচ্ছি না।’

প্রধান বিচারপতি বলেন,‘আমি বিচার বিভাগের জন্য যে কিছু করতে চাই। তবে যদি না আপনারা সহযোগিতা না করেন। আমি চাই আপনাদের সহয়োগিতা। আমি চাই বিচার বিভাগের ভীত।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি আবুল খায়েরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। অনুষ্ঠানে আলোচনা শেষ করে প্রধান বিচারপতি বইমেলার উদ্বোধন করেন।

এফএইচ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।