ড্রেনে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, ২৫ নভেম্বর ২০২১
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদ মাজার গেট এলাকার খোলা ড্রেনে পা ফসকে পড়ে নিখোঁজের পর মারা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী সেহরীন মাহবুব সাদিয়ার (১৯) পরিবারকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন হয়েছে।

এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় শিক্ষার্থীর মামা জাহিদ উদ্দিন বেলাল, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার অনিক আর হক এ রিট দায়ের করেন।

অ্যাডভোকেট এএম জামিউল হক ফয়সাল রিট দায়েরের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

রিটের বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েরতুর রহীম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান আইনজীবীরা।

রিটটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আজ উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। সঙ্গে ছিলেন সিসিবি ফাউন্ডেশনের পরিচালক অ্যাডভোকেট এএম জামিউল হক ফয়সাল।

আইনজীবীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী সেহরীন মাহবুব সাদিয়ার ড্রেনে পড়ে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা জানাতে বলা হয়েছে। ড্রেনে পড়ে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট বিবাদীরা তদন্ত করেছেন কিনা, ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বা অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন কিনা তারও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে বলা হয়েছে রিটে।

এর আগে ১৯ অক্টোবর এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। বলা হয়েছিল, নোটিশ পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এর আইনি প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালত হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় এই রিটটি করা হয়।

চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যু: দায় কার? এই শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমদের পর চট্টগ্রাম নগরীতে নালায় পড়ে সেহরীন মাহবুব সাদিয়ার মৃত্যুতেও দায় নিতে চাইছে না সিটি করপোরেশন কিংবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ।

সরকারি দুটি সংস্থাই একে অন্যকে দোষ দিচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বলছে, দুদিকে ফুটপাত করলেও খালের মুখটি অরক্ষিত রেখেছে সিডিএ। তাই এর দায় সিডিএর। অন্যদিকে, সিডিএ বলছে, খালের মালিকানা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। তাই খালের মুখে সুরক্ষা নিশ্চিতের দায়িত্বও তাদের।

এদিকে, নালা-খালে একের পর এক মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। তারা বলছেন, দায় এড়ানোর এই প্রবণতা প্রমাণ করে সেবা সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো স্বাচ্ছন্দ্যের পরিবর্তে নগরবাসীর ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে এক আত্মীয়সহ চশমা কিনে বাসায় ফেরার পথে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ মাজার গেট ও আগ্রাবাদ মোড়ের মাঝামাঝি এলাকায় ডায়মন্ড রেস্টুরেন্টের বিপরীত পাশের খোলা ড্রেনে পা ফসকে পড়ে নিখোঁজ হন সেহরীন মাহবুব সাদিয়া। তিনি চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের স্নাতক প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিখোঁজের পাঁচ ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এফএইচ/ইএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।