আবদুল মোমিনের বিরুদ্ধে যে তিন অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৪১ এএম, ২৪ নভেম্বর ২০২১

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালীন সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মোমিন তালুকদার ওরফে খোকার (৬৬) বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হবে আজ।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ রায় ঘোষণা করা হবে। ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।

আবদুল মোমিন তালুকদার খোকা ওরফে খোকা রাজাকারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে ২০১১ সালে আদালতে মামলা করেন আদমদীঘির কায়েতপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুবিদ আলী। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করতে আদমদীঘি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। পরে ওই মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর হয়।

মোমিনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি থেকে থেকে ২০১৮ সালের ৩ মে পর্যন্ত মামলার তদন্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে ৭১ সালের বিভিন্ন স্থানে ১৯ জনকে হত্যাসহ লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ফরমাল চার্জ গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন।

অভিযোগ তিনটি হলো

প্রথম অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ২২ এপ্রিল দুপুরের দিকে আসামি আবদুল মোমিন তালুকদারসহ পাঁচ থেকে ছয়জন মিলে ২০ জন পাকিস্তানি সেনা নিয়ে বগুড়ার আদমদিঘী থানার কলসা বাজার, রথবাড়ি ও তিয়রপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যা করতে অপারেশন চালায়। ওইদিন আসামি নিজে তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কলসা গ্রামের ইসলাম উদ্দিন প্রামানিকসহ হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করেন।

দ্বিতীয় অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবরে অভিযান চালিয়ে একই থানার কাশিমালা গ্রামে হামলা চালিয়ে ১৬ থেকে ১৭টি বাড়ি লুণ্ঠন করে এবং সেদিন পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করেন।

তৃতীয় অভিযোগ, ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর রাতে আবদুল মোমিন তালুকদার রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনী নিয়ে আদমদিঘী থানার তালশন গ্রামের অভিযান চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেন।

২০১৮ সালের ৩ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আসামি আবদুল মোমিন মুসলিম লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। আদমদীঘি থানার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে সহযোগিতা করেন অন্যান্য রাজাকার ও পাকিস্তান বাহিনীকে। তার বিরুদ্ধে মোট ৭১৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। পরে আদমদীঘি উপজেলা বিএনপির সভাপতি হন। এরপর বগুড়া জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন আবদুল মোমিন। তিনি ২০০১ ও ২০০৮ সালে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এফএইচ/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।