নোয়াখালীতে শিশু আরাফাত হত্যা, জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৮ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২১
ফাইল ছবি

প্রায় ১৪ বছর আগে নোয়াখালীর সুধারাম উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের নয় বছরের শিশু আরাফাত হোসেনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে একমাত্র আসামি মো. জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে দেওয়া রায়ের রিভিউ আবেদন খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। ফলে আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশই বহাল থাকছে।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ খারিজ আদেশ দেন।

এদিন আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী এবিএম বায়েজীদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

এর আগে গত ৮ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের ভার্চুয়াল বেঞ্চ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছিলেন।

ওইদিন আদালতে আসামিপক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এ বি এম বায়েজীদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

পরে রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন আসামি জাহাঙ্গীর।

দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকায় নিয়ম অনুযায়ী রায় প্রকাশের পর মো. জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দণ্ড কার্যকরের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা হবে। রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার ফলে এখন আসামি সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ারও সুযোগ পাবেন। রাষ্ট্রপতি আবেদন খারিজ করলে কারা কর্তৃপক্ষ আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায়ে ফাঁসি কার্যকর করতে পারবেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১৩ মার্চ সন্ধ্যার পর সুধারাম উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের শিশু আরাফাত হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর পাশের কবরস্থানে ফেলে রাখেন আসামি মো. জাহাঙ্গীর। আরাফাত একই জেলার মাইজদী নুরানি হাফেজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী ছিল। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা বাবুল খান বাদী হয়ে ওই বছরের ১৫ মার্চ মামলা করেন। ১৮ মার্চ হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন জাহাঙ্গীর।

জবানবন্দিতে তিনি জানান, নিহত আরাফাতের বাবার কাছে তারা (জাহাঙ্গীর) জমি বিক্রি করে। জমির টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি। এ মামলায় বিচার শেষে নোয়াখালীর আদালত ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই মো. জাহাঙ্গীরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এরপর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য নিম্ন আদালত থেকে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। একইসঙ্গে কারাবন্দি আসামি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন।

পরে উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দেওয়া বিচারিক আদালতের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এরপর আসামি কারাগারে থেকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেন। আজ এ আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি হয়। আসামিপক্ষ থেকে কোনো আইনজীবী না থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে (রাষ্ট্রীয় খরচে) আইনজীবী অ্যাডভোকেট এবিএম বায়েজীদকে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

এফএইচ/এমকেআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।