রিং আইডির সাইফুলের জামিন মেলেনি
রাজধানীর ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় রিং আইডির পরিচালক সাইফুল ইসলামের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়া শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
৫ অক্টোবর দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে জামিন শুনানির জন্য ১১ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২ অক্টোবর সাইফুলকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
রিং আইডিতে বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন, এমন অভিযোগে আঁখি বেগম নামের এক ভুক্তভোগী গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১৫ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং কন্ট্রোল অ্যাক্টের আওতায় মামলা করেন।
সাইফুল ইসলাম ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- শরিফুল ইসলাম, ইরিন ইসলাম, সালাহউদ্দিন, আহসান হাবিব, রফিকুল ইসলাম, নাজমুল হাসান, আব্দুস সামাদ, রেদোয়ান রহমান ও রাহুল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, একটি সংঘবদ্ধ ডিজিটাল প্রতারকচক্র রিং আইডির আড়ালে কয়েন বিক্রি করে ইলেকট্রনিক লেনদেনের সাহায্যে অর্থ সংগ্রহ করতো। অভিযুক্তরা সহজে আয়ের পথ হিসেবে মানুষকে রিং আইডিতে বিনিয়োগে প্ররোচিত করেছেন। ২০১৯ সালে বাদী আঁখি বেগম, তার দুই ভাই ও এক ভাগনে মোট ৮৬ হাজার টাকা কয়েক ধাপে সেখানে বিনিয়োগ করেন। এর মধ্যে আঁখির এক ভাই সামান্য কিছু টাকা উত্তোলন করতে পেরেছিলেন। এরপর তারা আর কোনো লাভ কিংবা বিনিয়োগ করা মূলধন ফেরত পাননি।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম রিং আইডি ‘কমিউনিটি জবস’ খাতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে উপার্জনের কথা বলে জনগণের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, কেবল ‘কমিউনিটি জবস’ খাত থেকেই গত মে মাসে ২৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, জুন মাসে ১০৯ কোটি ১৩ লাখ ও জুলাই মাসে ৭৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ করেছে রিং আইডি। তিন মাসে তারা হাতিয়ে নিয়েছে মোট ২১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
রিং আইডি যেন অবৈধভাবে দেশের টাকা বাইরে পাচার করতে না পারে সেজন্য এরই মধ্যে তাদের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ জানিয়েছে সিআইডি।
জেএ/এমএইচআর/এমএস