তালাকের কোনো প্রসেসই মানেননি নাসির-তামিমা: পিবিআই প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫০ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেছেন, তালাক হতে গেলে যে প্রসেস মানা দরকার তার কোনোটিই ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও এয়ারলাইন্স কোম্পানি সৌদিয়ার কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মী মানেননি। সুতরাং এটি অবৈধ।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পিবিআই সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এক সময় তামিমা রাকিব হাসানের স্ত্রী ছিলেন। কিন্তু নাসির তামিমাকে আবারও বিয়ে করেছেন, সুতরাং আগের বিয়ের ডিভোর্স হয়েছে কি না তা আইনগতভাবে যাচাই-বাছাই করার কথা। তামিমা আমাদের কাছে দাবি করেছেন তিনি রাকিবকে ডিভোর্স দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন আসতে পারে রাকিব কেন মামলা করলেন?

পিবিআই প্রধান বলেন, তালাকপ্রাপ্ত হয়েছেন কিন্তু তালাক হয়নি এ বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে আমরা দেখলাম তালাক হতে গেলে তিনটি শর্ত লাগে।

প্রথমত সংশ্লিষ্ট কাজীকে উপস্থাপন করা, দ্বিতীয়ত যিনি তালাকপ্রাপ্ত হবেন অথবা যাকে তালাক দেওয়া হবে তার বাসায় একটি নোটিশ পাঠানো এবং তৃতীয়ত যিনি তালাকপ্রাপ্ত হবেন তার স্থায়ী ঠিকানায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মাধ্যমে একটি নোটিশ পাঠাতে হবে।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, প্রথমটি হলেও দ্বিতীয়তটিতে দাবি করা হয়েছে নোটিশ রাকিব হাসানের বাসায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু যে তারিখে চিঠিটি রাবিক হাসানের বাসায় প্রসেস করা হয়েছে সেই সময় ওই বাসায় তিনি থাকতেন না। অর্থাৎ চিঠি প্রসেসের ছয় মাস আগে রাকিব অন্য বাসায় ছিলেন। যেই তারিখে চিঠিটি দেখানো হয়েছে সেই সময় ঠিকানাটি ভুল ছিল। অর্থাৎ সেই ঠিকানায় রাকিব থাকতেন না ওই বাসায়। এই প্রসেসটি মানা হয়নি এবং তারা সঠিক কথা বলছেন না।

 

jagonews24

নাসির ও তামিমা ডাকযোগে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে যে চিঠিটি দেখিয়েছেন তাও সঠিক দেখাননি বলে জানান পিবিআই প্রধান। কারণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেছেন তিনি এমন কোনো চিঠি পাননি।

পিবিআই প্রধান আরও বলেন, তামিমা যে পাসপোর্ট ব্যবহার করেন তাতে তালাক দেখানো হয়েছে ২০১৬ সালে। কিন্তু ২০১৮ সালে পাসপোর্ট রিনিউয়ের সময় স্বামীর নাম রাকিব হাসান দেওয়া হয়। আমরা বলতে পারি বিয়ে চলমান অবস্থায় তালাক দেখানো হয়েছে। নাসিরের উচিত ছিল তামিমা যে তালাকনামাটি দেখিয়েছেন তা সঠিক কি না যাচাই করা।

তালাকনামাটি জালিয়াতির মাধ্যমে হয়েছে এবং এই জালিয়াতিতে তামিমার মা সুমি আক্তার সহযোগিতা করেছেন বলে উল্লেখ করেন বনজ কুমার মজুমদার।

এখন নাসির-তামিমার বিরুদ্ধে পিবিআই কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন।

এদিকে নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করা হয়।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই দিনই বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত। এরপর শুনানি শেষে মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে পিবিআইকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের আট বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তামিমা পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের (২০২১) ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমা ও নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্রপত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকাবস্থায় নাসিরকে বিয়ে করেছেন তামিমা, যা ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। তামিমাকে প্রলুব্ধ করে নাসির নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। তামিমা ও নাসিরের এমন অনৈতিক ও অবৈধ সম্পর্কের কারণে রাকিব ও তার আট বছর বয়সী শিশুকন্যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছেন। আসামিদের এ ধরনের কার্যকলাপে রাকিবের চরম মানহানি হয়েছে, যা তার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।

টিটি/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।