বাইক না দেওয়ায় ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা
অর্ডারের পর ১২৫ সিসির একটি হিরো মোটরসাইকেল না দেওয়ায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আলমগীর হোসেন রিগ্যান নামে এক আইনজীবী। মামলায় ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেলসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন- ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ জাহিদ, মেহেদী হাসান, কো-ফাউন্ডার আতিউর রহমান, অ্যাক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আরিফুল্লাহ খান, এহসান চৌধুরী, ডিরেক্টর ফিরোজ হোসেন, হেড অব কমার্শিয়াল সাজ্জাদ আলম ও চিফ অপারেটিং অফিসার তরিকুল কামরুল।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আইনজীবী আলমগীর হোসেন রিগ্যান নিজেই বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালতে এ মামলা করেন। আদালত রাজধানীর খিলগাঁও থানাকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, গত ৩০ এপ্রিল তিনি ইভ্যালির ওয়েবসাইটে সাইক্লোন অফারের টি-টোয়েন্টি বিজ্ঞাপনটি রাত ১০টার দিকে দেখতে পান। পরে সেখান থেকে ১২৫ সিসির একটি হিরো মোটরসাইকেল ৭০ হাজার ৯৯ টাকায় ৭ থেকে ৪৫ দিনে ডেলিভারির আশ্বাসে অর্ডার দেন। যার বর্তমান মূল্য এক লাখ ২৭ হাজার টাকা। বাদী বিভিন্ন সময় অফারের দেওয়া টাকা পরিশোধ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাদীকে মোটরসাইকেল বুঝিয়ে দেয়নি ইভ্যালি।
এর আগে একই ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আলমগীর হোসেন রিগ্যান। পরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসাম জগলুল হোসেন মামলাটি খারিজ করে দেন।
অন্যদিকে, ২৩ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানার প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির এমডি ও সিইও মোহাম্মদ রাসেলকে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
একই দিন ধানমন্ডি থানার প্রতারণার আরেক মামলায় একদিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এসময় ধানমন্ডি থানার প্রতারণার আরেক মামলায় তাকে ফের পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ।
এসময় তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে তিনদিনের মধ্যে একদিনের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডি থানার প্রতারণার মামলায় মোহাম্মদ রাসেলকে একদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন আদালত। রাসেলের স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
ওইদিন গুলশান থানার প্রতারণার মামলায় তিনদিনের রিমান্ড শেষে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর ধানমন্ডি থানার প্রতারণার আরেক মামলায় তাদের সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ।
এসময় আসামিদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ইভ্যালির এমডি রাসেলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং শামীমার রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালতে তাদের হাজির করা হয়। এরপর গুলশান থানায় প্রতারণার অভিযোগে করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াহিদুল ইসলাম।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিটন তাদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইভ্যালির এমডি রাসেলের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযান শেষে এ দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়।
জেএ/এমএএইচ/এমএস