নথি জালিয়াতি: রুবেলের জামিন বিষয়ে আদেশ মঙ্গলবার
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নথি জালিয়াতির ঘটনায় বরখাস্ত কর্মচারী মো. রুবেলের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
রুবেলের দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদালতে দাখিল সাপেক্ষে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো.নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো.কামরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভূইঁয়া।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৭ জুন রুবেলকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ রুল শুনানিতে আদালত রুবেলের দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দুদককে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদের জন্য ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম এনামুল হক, বুয়েটের পুরঃকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নাম প্রস্তাব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নথি পাঠানো হয়। সে নথি প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হলে তিনি অধ্যাপক ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন।
পরে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে নথি পাঠানোর প্রস্তুতি পর্বে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অফিস সহকারী ফাতেমার কাছে যায় এবং তিনি ফোনে ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলকে জানান যে, এম আবদুস সালাম আজাদ কোষাধ্যক্ষ হিসেবে অনুমোদন পাননি।
এরপর তরিকুলের পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে নথিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের করে ফরহাদ নামের একজনের হাতে তুলে দেন ফাতেমা। ওই নথিতে ড. এম এনামুল হকের নামের পাশে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া টিক চিহ্নটি ‘টেম্পারিং’ করে সেখানে ক্রস চিহ্ন দেন তরিকুল। একইভাবে অধ্যাপক মো. আব্দুর রউফের নামের পাশে ক্রস চিহ্ন দিয়ে এয়ার কমোডর এম আবদুস সালাম আজাদের নামের পাশে টিক চিহ্ন দেন তিনি। পরে নথিটি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
নথি হস্তান্তরের আগে ফাতেমা বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন এবং হস্তান্তরের পর আরেক দফায় তার ছেলের বিকাশ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আরও ১০ হাজার টাকা নেন বলে জালিয়াতি মামলার অভিযোগে বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ মোহাম্মদ রফিকুল আলম বাদী হয়ে গত বছরের ৫ মে এ বিষয়ে মামলা করেন। এ মামলায় ওই ছাত্রলীগ নেতাসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।
চার্জশিটভুক্ত আসামি মো.রুবেল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ডেসপাস রাইটার। তার বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। তাকে গত বছরের ১৯ মে গ্রেফতার করা হয়। পরে নিম্ন আদালতে জামিন খারিজের পর তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। হাইকোর্ট ১৭ জুন তার জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন।
এফএইচ/এমকেআর/জিকেএস
