আদালতের রায় আমার সাহস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪০ পিএম, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সাংবাদিক প্রবীর সিকদার বলেন, একাত্তরে আমার বাবার মরদেহ পাওয়া যায়নি। কাকা, দাদু, মামাদের আমাদের চোখের সামনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এজন্য এই দেশটিকে বাবার কবর স্থান মনে করি। এই কবর স্থানের ওপর যারাই অসঙ্গতি করবে, অনিয়ম করবে, অন্যায় করবে তাদের প্রতি আমি প্রতিবাদ করে যাবো। আদালতের রায় আমার সাহস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ দেশটিকে লুটপাটের কারখানা হতে দেবো না। আমি একা হলেও এই প্রতিবাদ করে যাবো। ছয়টি বছর আমি লড়াই করে জিতেছি। কিন্তু আমার জীবন, আমার পারিবারিক জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে। বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে এনে ঢাকা শহরে খেতে হয়। কেউ আমাকে কাজ দেয় না। আমার নিজের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে ভয় পায়। এ রকম একটি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবে রায়ে আমি দারুণ খুশি।

বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করেন। এদিন রায় ঘোষণার আগে প্রবীর সিকদার আদালতে হাজির হন।

এর আগে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন। এরপর নির্ধারিত দিনে রায় ঘোষণা না করে বিচারক ১১ এপ্রিল রায় ঘোষণার নতুন দিন ঠিক করেন। তবে করোনাজনিত কারণে আদালতের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি আবার আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করেন আদালত।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সাংবাদিক প্রবীর সিকদার ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট ফেসবুকে তৎকালীন এলজিআরডিমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন।

এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট তার বিরুদ্ধে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় মামলা করেন জেলা পূজা উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা স্বপন পাল। ওই রাতেই গ্রেফতার হন প্রবীর। পরে তাকে তিনদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। একই বছরের ১৯ আগস্ট তিনি জামিনে মুক্তি পান।

২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসেন তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। ২০১৬ সালের ৪ আগস্ট প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতাবিরোধীরা প্রবীর সিকদারের বাবাসহ তার পরিবারের ১৪ জনকে হত্যা করে। ২০০১ সালে দৈনিক জনকণ্ঠের ফরিদপুর প্রতিনিধি থাকাকালে রাজাকারদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিবেদন লেখার পর সন্ত্রাসীদের হামলায় তাকে একটি পা হারাতে হয়। প্রবীর সিকদার বর্তমানে দৈনিক বাংলা ৭১, অনলাইন পত্রিকা উত্তরাধিকার-৭১ নিউজ ও ত্রৈমাসিক পত্রিকা উত্তরাধিকারের সম্পাদক।

জেএ/এআরএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।