টিকায় অন্তঃসত্ত্বাদের অগ্রাধিকার চেয়ে রিট
চলমান মহামারিতে করোনা আক্রান্ত হওয়া রোধে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এবং আইইডিসিআরের পরিচালককে (ডিজি) বিবাদী করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ জুলাই) জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এই রিট আবেদন করেন। রিটের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) মানবাধিকার সগঠন ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ই-মেইলের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, জনস্বার্থে এ বিষয়ে নোটিশ পাঠিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকাদান শুরু করা না হলে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার জন্য হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে জানানো হলেও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার ভ্যাকসিন (টিকা) দেয়ার আর্জি জানিয়ে রিট আবেদন করা হয়।
রিটে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩৫ লাখ নারী অন্তঃসত্ত্বা হন। অর্থাৎ ৩৫ লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী আরও ৩৫ লাখ মানুষের অস্তিত্ব বহন করেন। কিন্তু করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং শিশুরা মারা যাচ্ছে। উপযুক্ত সময়ে সঠিকভাবে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করোনার টিকা ব্যবস্থা করা গেলে অনেক হতাহত কমিয়ে আনা সম্ভব।
আবেদনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে অন্তঃসত্ত্বাদের করোনা ভ্যাকসিন দেয়া যাবে। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্তঃসত্ত্বাদের ফাইজার ও মডার্না উৎপাদিত কোভিড ভ্যাকসিন দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই সব দেশের অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসছেন। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
গবেষণা অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকির মধ্যে থাকে এবং কোনো কারণে আক্রান্ত হলে তাদের এবং শিশুর জীবন বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে।
এতে বলা হয়, অত্যন্ত দুঃখের বিষয়- সরকারের নির্ধারিত করোনা ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশনের সুরক্ষা অ্যাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন করার জন্য অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ তাদের চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রিটে আরও বলা হয়, সংবিধান স্বীকৃত একটি মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তঃসত্ত্বাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা একটি নিপীড়নমূলক, বৈষম্যমূলক এবং তাদের জীবনধারণের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। অতএব অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে টিকা প্রদানের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে সুযোগ করে দেয়া সরকারের অন্যতম দায়িত্ব।
এফএইচ/এআরএ/এমএস